জুমার দিনে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত ও তাৎপর্য
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩০
জুমার দিনে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত ও তাৎপর্য
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

জুমাবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। পবিত্র কুরআনে জুমা নামে একটি সুরাও রয়েছে। যেখানে মহান এই দিনের তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচাকেনা বর্জন করো। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)।


অন্যদিকে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- সূর্য উদয়ের দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমাবার। এই দিনে আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়। তাকে ওইদিনই জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। তাকে তা থেকে ওইদিনই বের করা হয়। আর কিয়ামতও হবে জুমার দিনেই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৫০)


এ ক্ষেত্রে জুমা আদায়কে ফরজ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিনা কারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারেও কঠোর নিষেধ রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা বিনা ওজরে (কোনো কারণ ছাড়া) ও ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তা’য়ালা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৫০০)।


তাই জুমার দিনে গোসল, মিসওয়াক, সুগন্ধি ব্যবহারসহ উত্তম কাপড় পরিধান করে মসজিদে যাওয়ার কথাও অনেক হাদিসে এসেছে। সালমান ফারসী (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, এরপর তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত (নামাজ) আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুতবার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৬৪)


তবে পবিত্র জুমার দিনে পায়ে হেঁটে মসজিদে গেলেও বিশেষ সওয়াব রয়েছে। খোদ রাসুল (সা.)- ও পায়ে হেঁটে জুমার নামাজে যেতেন। সালামা ইবনু আকওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, সূর্য মধ্যাকাশ থেকে ঢলে যাওয়ার পর আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে জুমার সালাত আদায় করতাম। এরপর ছায়ায় ছায়ায় হেঁটে প্রত্যাবর্তন করতাম। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৬৫)


আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, আমি রাসুল (সা.)- কে বলতে শুনেছি, যখন সালাত (নামাজ) শুরু হয়, তখন দৌড়ে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে না, বরং হেঁটে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে। সালাতে ধীরস্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামাতের সঙ্গে সালাত যতটুকু পাও আদায় কর, আর যা ফাওত (বাদ যাওয়া বা ছাড়া যাওয়া) হয়ে গেছে, পরে তা পুরো করে নাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৬২)


আবার পায়ে হেঁটে জুমার নামাজে গেলে এক বছরের সিয়াম ও কিয়ামের সওয়াবের কথাও হাদিসে এসেছে। আওস ইবনু আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে জুমার দিনে সকাল সকাল গোসল করল এবং গোসল করাল (নিজে এবং স্ত্রীকে), তারপর ইমামের কাছে গিয়ে বসে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, তার প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে এক বছরের সিয়াম ও কিয়ামের (সালাতের) সওয়াব। (সুনান ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১০৮৭, সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৪৯৬)


এছাড়াও আবায়া ইবনু রিফা’আ (রহ.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, আমি জুমার সালাতে যাওয়ার সময় আবু আব্‌স (রা.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যার দু’পা আল্লাহর পথে ধূলি ধূসরিত হয়, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৬১)


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com