বিবার্তাকে সাক্ষাৎকারে মাহবুবউল আলম হানিফ
'নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর'
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ০৯:৫৩
'নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর'
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বাংলাদেশের এই নির্বাচনকে ঘিরে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি এই ভিসানীতিকে স্বাগত জানিয়েও সরকারের পদত্যাগসহ নানা দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে।



অন্যদিকে, প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, এতে জনমনে বাড়ছে অশ্বস্তি। সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনের ছয় মাস আগে এসব নিয়ে কী ভাবছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ? এছাড়াও সমসাময়িক নানা বিষয়ে সম্প্রতি কারওয়ানবাজারে নিজ কার্যালয়ে বিবার্তার সাথে কথা বলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিবার্তা নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল আহমদ। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো।



বিবার্তা : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতি যাতে না হয় সেজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?


মাহবুবউল আলম হানিফ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কি হবে, না হবে- সেটা তাদের রাষ্ট্রীয় বিষয়। এটি নিয়ে আমাদের খুব বেশি ভাবনার কিছু আছে বলে মনে করি না। তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা আমাদের অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চায়।


আমরা বহু আগ থেকে তো বলে আসছি, আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহণমূলক করতে চাই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য করতে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর। যারা আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন তাদের চাওয়া আর আমাদের চাওয়া এক ও অভিন্ন। অতএব, আমি মনে করি না এটি নিয়ে অহেতুক অন্য কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রয়োজন আছে।


বিবার্তা : বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন ভিসানীতিকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে সরকারের পদত্যাগসহ নানা দাবিতে আন্দোলন করছে?


মাহবুবউল আলম হানিফ: বিএনপি তার রাজনৈতিক কৌশল থেকে অনেক কথা বলতে পারে। বিএনপি'র কথা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আর এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য বিএনপি'র আন্দোলন অনেক আগে থেকেই চলছে। ২০১২ সালে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছিল, তখন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পতন ঘটানোর জন্য খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু করেছিল। দেশবাসীর স্মরণে আছে হয়তো। আজ থেকে ১১ বছর আগের ঘটনা। খালেদা জিয়া বহু জনসভা করে বলেছিলেন, আগামী ঈদের পর থেকে তীব্র আন্দোলন হবে। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন। সেই ১১ বছর আগে শুরু করা আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি, সরকারেরও পতন হয়নি। সরকার এখনো আছে। বিএনপি'র এ সমস্ত আন্দোলনের কথাবার্তা খুব একটা গুরুত্ব সহকারে নেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আমরা আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে সংবিধান অনুযায়ী সংবিধানের মধ্যে থেকে অবাধ সুষ্ঠু করতে বদ্ধপরিকর।



বিবার্তা : বিএনপি নেতা-কর্মীদের নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সাড়ে ১৩শ' মামলা নিয়ে সরকার মাঠে নেমেছে। বিএনপি নেতারা এমন অভিযোগ করছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?


মাহবুবউল আলম হানিফ : সরকার সাড়ে ১৩শ' মামলা নিয়ে মাঠে নামবে কেন? এই মামলাগুলো তো নির্বাচনের জন্য হয়নি, এই মামলা বহু আগে থেকে। বিএনপি যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল ওই মেয়াদে যে সমস্ত দুর্নীতি-অনিয়ম করেছে সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এর বেশিরভাগ মামলাই হচ্ছে সেই সময়কার। তাদের নেতা তারেক রহমান, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া সেসব মামলা নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। এগুলো নতুন মামলা নয়।


বিএনপি নেতাদের নামে যে মামলাগুলো হয়েছিল সেগুলো ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের। তারা আগুন দিয়ে, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, সন্ত্রাস করে মানুষকে পুড়িয়ে-কুপিয়ে নারকীয়ভাবে হত্যা করেছিল সেই সব মামলা। সেগুলোর কি বিচার হবে না? এগুলো তো আজকের না যে সরকার নতুন করে কারো বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। তারা যে অপরাধ করেছিল, এ মামলাগুলো সেই সময়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হয়েছিল। সেসব মামলা নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। স্বজন হারানো ব্যক্তিরা হত্যার বিচার চাইবে না? বিচার পাবে না? রাজনীতি করলে কি আইনের উর্ধ্বে চলে যাবে? মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিচার করা যাবে না? মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করবে, বাসে আগুন দিবে তার বিচার হবে না!


বিবার্তা : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ বেশ কষ্টে আছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে সব দাম জিনিসপত্রের সীমাহীন বেড়েছে। আপনার কী মত?


মাহবুবউল আলম হানিফ : শুধুমাত্র যদি বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি হতো তাহলে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে এ অভিযোগ করতে পারতো। কিন্তু এটি তো জানতে হবে, ২০২০-২০২১ সালে করোনা মহাদুর্যোগে পুরো পৃথিবীর অর্থনীতি ও জনজীবন বিপর্যস্ত ছিল। ৬৫ কোটি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিল, ৭০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, মানুষ ঘরে বন্দি ছিল। শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এরকম একটা মহাদুর্যোগে সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক মন্দা ছিল।


এরপর ২০২২ সালের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীজুড়ে আরেকটা সংকট তৈরি হয়েছে। পৃথিবীর অর্থনীতি আরেকটা ভয়াবহ সংকটের মধ্যে। ইউরোপসহ বহু দেশে এমন কী আমাদের দেশেও তেল, গ্যাস আমদানি করতে হয় রাশিয়া থেকে। যুদ্ধের কারণে তেল রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগে। আর এই ধাক্কায় সারা পৃথিবীতে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। সেই কারণে বাংলাদেশেও দাম বেড়েছে- এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। সারা পৃথিবীর মানুষ কষ্ট করছে। এদেশের মানুষেরও কষ্ট হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য যাতে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়।


বিবার্তা : দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিয়ে উৎসব হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, লোডেশেডিং বেড়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হওয়ার পর লোডেশেডিং কেন?


মাহবুবউল আলম হানিফ : শতভাগ বিদ্যুতায়ন আর লোডশেডিং আলাদা বিষয়। বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শতকরা ৩০ ভাগের কম মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো। সে সময় মানুষ চার থেকে পাঁচ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পেত না। তখন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। এখন সেখান থেকে ১৪ বছরে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার মেগাওয়াট হয়েছে। এখন শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়েছে।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল, গ্যাস রফতানি বন্ধ। এর ফলে কিন্তু শুধু বাংলাদেশ নয়; জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্সের মতো উন্নত অনেক দেশেও কিন্তু জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নানান সমস্যা হচ্ছে। আমাদের জ্বালানি সংকট বেড়েছে- কারণ অস্বাভাবিকভাবে এলএনজি, তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। যেখানে চার থেকে ছয় ডলারে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি পেয়েছি, সেটা বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ ডলার হয়েছিল। সব মিলিয়ে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে সরবরাহে ঘাটতি হয়ে যায়। সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে হয়তো আমরা পরিপূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারিনি বা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সাধারণ মানুষের সাময়িক কষ্ট হচ্ছে।


সরকার ইতিমধ্যে কাতার এবং ওমানের সাথে তেল এবং এলএনজি গ্যাস আনার জন্য চুক্তি করেছে। কয়লা দ্রুত আনার জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, আগামী এক মাসের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে এবং মানুষ কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।


বিবার্তা : ওলামা লীগ ধর্মভিত্তিক দল। সম্প্রতি তাদের জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, ওলামা লীগ আওয়ামী লীগের স্বীকৃত সংগঠন হতে যাচ্ছে। এছাড়া সম্প্রতি ধর্মীয় সংগঠনের প্রতি সেক্যুলার আওয়ামী লীগের এক ধরণের ঝোঁক দেখা যাচ্ছে। এর কারণ কী?


মাহবুবউল আলম হানিফ : আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সেক্যুলার দল। এখানে ধর্মভিত্তিক সংগঠনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকার কথা নয়। অনেক সময় দেখা যায় যে একটা সংগঠনের সম্মেলন হয় তখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত দেয়া হয়। সে দাওয়াতের কারণে দল থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়, দল থেকে নেতারা যান। এখানে কী হিসাবে ওখানে তারা গিয়েছিলেন সেটা কি আমাদের ভেতরে অন্তর্ভূক্তির কারণে? এ বিষয়ে আমার কাছে পরিষ্কার তথ্য নেই। তাই আমি এ ব্যাপারে সঠিক কিছু বলতে পারব না। তবে আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে সেক্যুলারিজম নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, সেই ধারা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগের নিজস্ব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে দেশের গণমানুষের পক্ষে আজীবন কাজ করে গেছে সেই ধারা অব্যাহত থাকুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।


বিবার্তা : দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি ঝুলে আছে। অনেকে বলছেন, সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে বিষয়টি ঝুলে আছে। আপনার অভিমত কী?


মাহবুবউল আলম হানিফ : এটা আদালতে চলে গেছে, সরকারের হাতে নয়। আদালতে বহু মামলা ঝুলে আছে। সেই কারণে এখন আদালত সঠিকভাবে বলতে পারবে এটি কেন ঝুলে আছে। তবে একজন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কর্মী হিসেবে আমি চাই জামায়াতের মতো ধর্মভিত্তিক, যুদ্ধাপরাধী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দল রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ হোক।


বিবার্তা : চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের দেয়া নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরীখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’। প্রায় পাঁচ বছর হতে চললো। এ নিয়ে এখন দলের ভাবনা কী?


মাহবুবউল আলম হানিফ : একজন ছাত্র ২৪ বছরের মধ্যে মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করতে পারে এবং এরপর থেকে ছয় বছর চাকরি পাওয়ার সুযোগ থাকে। এটা কিন্তু চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময়। এরপরও আমরা দেখি যে নানান কারণে অনেক সময় আমাদের চাকরি প্রত্যাশীদের অনেক সময় নষ্ট হয়। বিশেষ করে গত তিন বছর করোনার কারণে দুই বছর সবকিছু বন্ধ ছিল। তাই স্বাভাবিকভাবে শিক্ষার্থীরা তারা তাদের চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেনি বা সম্ভব হয়নি। সেই হিসেবে একটা কনসিডারেশনের বিষয় থাকে। পাশাপাশি আমি মনে করি যে, একজন ছাত্র ৩০ বছর কেন ৩৫ বছরে গিয়েও যদি যোগ্যতায়, মেধায় চাকরি পায় তাহলে অসুবিধার কি আছে?


চাকরির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬০ বছর। যে ৩০ বছরে চাকরি পাবে সে চাকরির সুযোগ পাবে ৩০ বছর। আর যে ৩৫ বছরে চাকরি পাবে, সে চাকরি করার সুযোগ পাবে ২৫ বছর। এখানে বয়সটা আমার কাছে ফ্যাক্টর বলে মনে হয় না। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী ৩০ বছরের মধ্যে চাকরির সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেনি, পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি- তাদের জন্য আমরা দ্বার উন্মুক্ত করতে পারি। সেটা ৩৫ বছর করলে আমার মনে হয় সরকারের খুব একটা ক্ষতি নেই বা সমস্যা হবে না। আমি মনে করি এটা করাটা সময়ের দাবি। যৌক্তিকভাবে করা উচিত।



বিবার্তা : টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন জনগণ রায় দিলে আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?


মাহবুবউল আলম হানিফ : স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর সংসদ নির্বাচন দু'টি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে বলে এটা বেশ গুরুত্ব বহন করছে। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার হয়নি। স্থানীয় নির্বাচন নির্দলীয় হয়েছে। সেই জায়গা থেকে ভোটাররা বেরিয়ে আসছে এটা আমি মনে করি না। মানুষ এখনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে নির্দলীয় ভাবেই দেখতে চায়।


গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের ভালো প্রার্থী ছিলেন আজমত উল্লা সাহেব। রাজনীতির মাঠে আদর্শিকভাবে এখানে আমাদের মূল প্রতিপক্ষ বিএনপি। রাজনৈতিকভাবে দুইটা প্ল্যাটফর্ম আছে। একটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্লাটফর্ম আর বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে আরেকটি প্লাটফর্ম। বিএনপি গাজীপুরের নির্বাচনে অংশ নেয়নি। স্বাভাবিকভাবে এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী এন্টি আওয়ামী লীগ থেকে ভোট পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তারা জয় লাভ করতে পারে। যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী এন্টি আওয়ামী লীগ ভোটটা পুরোপুরি পায় সঙ্গে আওয়ামী লীগের কিছু অংশ পেলে দেখা যায় জয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রেডিকশন করার যৌক্তিকতা নেই।


বিবার্তা : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জের?


মাহবুবউল আলম হানিফ : চ্যালেঞ্জের বড় বিষয় হলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা বা যাতে আগামীতে ক্ষমতায় না আসতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। আমি মনে করি যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, এই উন্নয়ন-অগ্রগতির সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে।


গত তিন বছরে হয়তো দুর্যোগের কারণে, একটু বেশি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষ একটু কষ্ট পাচ্ছেন। সেটা হয়তো দুই মাসের মধ্যে কেটে যাবে। তারপরে মানুষ আবার অতীতের মতো উন্নয়নের সুফল পাবে। যদি উন্নয়নের সুফলের চিত্র সঠিকভাবে জনগণের কাছে তুলে ধরা যায়- আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে। আমি মনে করি যত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থাকুক আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করার মতো অবস্থান কেউ তৈরি করতে পারবে না।


বিবার্তা : গুরুত্বপূর্ণ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।


মাহবুবউল আলম হানিফ : আপনাকেও ধন্যবাদ।


বিবার্তা/সোহেল/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com