
বাংলাদেশে নৌপথে পণ্য পরিবহন খাতে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বন্দর পরিচালনাকারী দুই কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এপি মোলার-মেয়ার্স্ক।
বাসস এক প্রতিবেদনে লিখেছে, কোম্পানি দুটি বঙ্গোপসাগরের উপকূলে নতুন বন্দর নির্মাণে সহায়তা করে বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৃহস্পতিবার ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম এবং এ পি মোলার-মেয়ার্স্ক এর চেয়ারম্যান রবার্ট মোলার উগলা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তারা ওই আগ্রহ দেখান বলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান।
ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইও বলেন, তারা চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট কমাতে এবং নির্গমন হ্রাস করে বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক এই লজিস্টিক কোম্পানির সিইও বলেন, নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে তাদের বিনিয়োগ বাংলাদেশে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং দূষণ হ্রাসে সহায়ক হতে পারে।
সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম বলেন, ডিপি ওয়ার্ল্ড যেখানে বিনিয়োগ করেছে, সেখানেই উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটেছে। ২০২২ সালে তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তখনকার সরকার তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম বৃহস্পতিবার ডাভোসে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম বৃহস্পতিবার ডাভোসে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
চট্টগ্রাম বন্দরে একটি ডিজিটাল অনলাইন কাস্টমস পদ্ধতি চালুরও আগ্রহ দেখিয়েছে ডিপি ওয়ার্ল্ড, যা দুর্নীতি কমাতে সহায়ক হবে।
সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম বলেন, তারা বাংলাদেশের ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোগুলোতেও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
প্রধান উপদেষ্টা তাকে বলেন, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে আরও বন্দর নির্মাণ করতে চায়।
“আমাদের এটি করতেই হবে কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে জড়িত। আমরা এটিকে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতা বাড়াতে চায়, কারণ বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, এ বন্দর উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের জন্য একটি আঞ্চলিক রপ্তানি হাব হতে পারে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের দ্রুত কাজ করতে হবে, কারণ সময় যথেষ্ট মূল্যবান।”
ডেনমার্ক-ভিত্তিক এপি মোলার-মেয়ার্স্ক এর চেয়ারম্যান রবার্ট মোলার উগলা বলেন, তারা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে এবং তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তায় এটিকে একটি পরিবেশবান্ধব বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চান।
তিনি বলেন, তার কোম্পানি মরক্কো ও ওমানেও একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। তাদের বিনিয়োগে ওমানের সালালাহ বন্দর ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা বন্দরে’ পরিণত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এপি মোলার-মেয়ার্স্কের কর্মকর্তাদের ঢাকায় আসার এবং বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশের বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে বেশ কিছু বন্দর নির্মাণ করতে হবে, যাতে আমরা আঞ্চলিক ব্যবসার একটি কেন্দ্র হিসেবে আমাদের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারি।”
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]