বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে তাকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্য বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা যাবে। তবে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে তাকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, অনেক দিন পর আজ ঢাকায় কর্মরত কূটনৈতিকদের নিয়ে নানা বিষয়ে ব্রিফ করেছি। এসব বিষয়ের মধ্যে ছিল করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা, জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের ভূমিকা, প্রধানমন্ত্রীর প্যারিস সফর, জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি, জাতিসংঘে পাস হওয়া রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রস্তাব, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে, সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে।
এদিকে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে ব্লিডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, এটা একটা হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। এটাকে বলে ‘টিপস’। বাংলাদেশে ‘টিপস’ করা কোনো রোগী আমরা দেখি না যার দুই থেকে তিনবার এটা করা হয়েছে। এটার জন্য ইউরোপ বেজড, বিশেষ করে ইউকে, জার্মানি এবং ইউএসএতে কিছু সেন্টার আছে। সেটাও পুরা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই দুই একটি সেন্টার আছে।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ‘টিপস ট্রিটমেন্টে’র ব্যাখ্যায় বলেন, জটিল এই চিকিৎসা মোস্ট হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। বাংলাদেশে আগে টিপস করা কোনো রোগী আমরা দেখি নাই। একজন রোগীর জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের ওইসব দেশ থেকে এই চিকিৎসা সেটআপ দেশে আনা একেবারেই সম্ভব।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার যকৃত বা লিভারে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। একবার এই রক্তক্ষরণ সামাল দেয়া গেছে। তবে এখন তার যে অবস্থা, সেটি দ্বিতীয়বার সামাল দেয়া কঠিন হবে। কারণ বাংলাদেশে দুই থেকে তিন বার রক্তক্ষরণ সামাল দেয়ার কারিগরি সুযোগ নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পেট থেকে চাকা চাকা রক্ত যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালে একবার রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া গেছে। কিন্তু এই ধরনের রোগীকে বারবার রক্ত দেয়া সম্ভব নয়।
এই চিকিৎসক বলেন, ‘আশঙ্কা করছি, আবার যদি ব্লিডিং হয় তাহলে যদি এটাকে কন্ট্রোল করা সাপোর্ট করা যাবে না। ব্লিডিং হয়ে মৃত্যুঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে। হাই রিস্কে আছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা সবাই একই পরামর্শ দিয়েছেন। আমাদের অনেক বন্ধু, সহকর্মী বিদেশে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। সবারই একই কথা। নতুন ব্লিডিং হওয়ার আগে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসা উচিত। কারণ এখন তিনি স্টাবল আছেন। তাই এখনো সময় আছে কিন্তু পরে পরিস্থিতি খারাপ হলে শিফট করা অসম্ভব হতে পারে। সেই অবস্থা কখন হতে পারে তা বলা অসম্ভব।
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]