
লবঙ্গ একটি পরিচিত মশলা, যা রকমারি খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাচীনকাল থেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ হওয়ায় বিভিন্ন সময় ছোট ছোট সমস্যায় লবঙ্গ খাওয়ার প্রচলন রয়েছে সমাজে।
লবঙ্গ খাবারে ব্যবহারে শুধু স্বাদ বৃদ্ধি হয় না, এটি শরীরকে শক্তিশালী পুষ্টি সরবরাহ করে। যা রোগ ও সংক্রমণকে দূরে রাখে এবং হজমের স্বাস্থ্যের জন্য বিস্ময়কর কাজ করে। শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা, বমি বমি ভাব, পেট ফাঁপা বা দাঁতের স্বাস্থ্য সমস্যার মতো জটিলতায় একটি মাত্র ছোট লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া হলে মুক্তি মিলতে পারে।
লবঙ্গ মশলাটি কোলেস্টেরল, রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ করা, হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা থেকে শুরু করে হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাসে উপকারী। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী পুষ্টিবিদ ভক্তি অরোরা কাপুর বলেছেন, লবঙ্গ শুধু মশলা নয়, এটি অবিশ্বাস্য উপকারিতায় ভরপুর পুষ্টিকর উপাদান।
প্রতিদিন একটি লবঙ্গ চিবানোর উপকারিতা:কোচির অমৃতা হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন বিভাগের ডায়েটিশিয়ান রহিতা ওআর বলেছেন, সকালে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া হলে লালা উৎপাদন বাড়ে, যা হজমে সহায়তা করে। লবঙ্গ খেলে বমি বমি ভাব ও অ্যাসিডিটি কমে। বার্ধক্য থেকে দূরে থাকা যায়। আবার কাশি দমনকারী হিসেবেও লবঙ্গ খেতে পারেন।
পুষ্টিবিদ ভক্তি অরোরা বলেন, আপনি যখন একটি লবঙ্গ চিবিয়ে খান, তখন শুধু স্বাদই নেয়া হয় না। এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলোও কাজে লাগানো হয়, যা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্তভাবে কাজ করে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে সতেজ রাখে:লবঙ্গ প্রদাহবিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত, যা সামগ্রিক সুস্থতা বাড়ায়। নিয়মিত খাওয়া হলে হজম ভালো হওয়া থেকে শুরু করে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। এটি প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য নেই, বরং এটি লিভারের স্বাস্থ্য ভালো করে, হজম উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ব্যথানাশক বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমকারী হিসেবে কাজ করে।
লবঙ্গ জয়েন্টের ব্যথা উপশমকারী হিসেবেও কাজ করে এবং এটি বমি বমি ভাব দূর করতে কাজ করে। এ জন্য প্রতিদিন খালি পেটে ১-২টি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া উচিত।
ভারতীয় ফিটনেস প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জিওকিউআইআই’র পুষ্টিবিদ আরুশি গর্গ বলেন, শুকনো লবঙ্গ লিভারের ওপর হেপাটো-প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলে। এটি নতুন কোষের বৃদ্ধি, লিভার ডিটক্স প্রচারের মাধ্যমে লিভারের স্বাস্থ্য উন্নতি করে এবং থাইমল ও ইউজেনলের মতো সক্রিয় যৌগের জন্য এর প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব রয়েছে।
লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে না পারলে করণীয়:লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে না পারলে বিকল্পভাবে গ্রহণের উপায় জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ ভক্তি অরোরা কাপুর। তিনি জানিয়েছেন, সকালের ওটমিলে গুঁড়া করা লবঙ্গ যোগ করার চেষ্টা করুন। পছন্দের দইয়ের ওপর ছিটিয়ে দিতে পারেন। আরামদায়ক ও সুগন্ধি অভিজ্ঞতার জন্য চায়ের সঙ্গেও যোগ করতে পারেন। এছাড়া রান্নাঘরে রেখে নানাভাবে ব্যবহার করতে পারেন, যেমন- মাংসের জন্য ম্যারিনেডে ব্যবহার অথবা বেকিং রেসিপিতে স্বাদ বাড়াতে যোগ করতে পারেন।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]