
জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘঠিত মানবতাবিরোধী মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের যে সাজা দিয়েছে সেটি আসামিরা যেদিন গ্রেফতার হবে সেদিন থেকে কার্যকর হবে। বলে জানিয়েছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এ মামলায় গ্রেফতার ও রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার পর প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, ‘মামলায় দুজন আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর একজন রাজস্বাক্ষী হওয়ায় সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে থাকা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটিতে সাজা দেওয়া হয়েছে।
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলায় যুগান্তরকারী রায় হয়েছে, যা প্রশান্তি আনবে ও বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে,’ বলেছেন তিনি।
‘সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরাতে যত ধরনের পদক্ষেপ আছেন তা নেবেন বলে আশা করি,’ বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আজ মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। আর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি অভিযোগ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
একটি অভিযোগে আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এ মামলার রায়ের জন্য আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) দিন ঠিক করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল-১–এর এজলাস থেকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় আজ ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার শেষে সাজার মুখোমুখি হয়েছেন।
মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক। দুজনই এখন ভারতে অবস্থান করছেন। এ মামলায় গ্রেফতার একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]