শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: আইনজীবী
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:২২
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: আইনজীবী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী মো. আমির হোসেন।


বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।


আমির হোসেন বলেন, আজ লার্নেড যে বক্তব্য দিয়েছেন সেই প্রেক্ষাপটে আমি দুটো জবাব দিয়েছি। উনি বলতে চাইছেন যে আমার আসামি পালিয়ে গিয়েছেন। আমি সেক্ষেত্রে বলেছি যে আমার আসামি পালিয়ে যাননি। উনি এ দেশ থেকেই যেতে চাননি, তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ প্রত্যেকটি জায়গায় এসেছে। উনি (শেখ হাসিনা) এ কথাও বলেছেন যে- আমাকে প্রয়োজনে এখানে মাটি দেন, হত্যা করেন, তবু আমি যাবো না। কিন্তু প্রেক্ষাপট এমন দাঁড়িয়েছে উনাকে যেতে বাধ্য হয়েছেন। উনি হেলিকপ্টারে গেছেন। দেশের মানুষ দেখেছেন। অতএব পালিয়ে যাওয়া বলে চোরের মতো লুকিয়ে যাওয়াটাকে। তবে এই পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টা আমি ডিফেন্ড করেছি।


তিনি বলেন, দ্বিতীয় একটি কথার জবাব দিয়েছি। একটা কথা বলা হয়েছে যে প্রজন্মকে শেষ করে দিতে চেয়েছে আমার আসামিরা। একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ হতে হলে যে একটি সম্প্রদায়কে বা একটি জাতিকে অথবা একটি গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া প্রচেষ্টা থাকতে হয়; সে হিসাবে মানুষকে হত্যা করতে হয় যা হিটলার করেছিল। ইহুদিদের ক্ষেত্রে জেনোসাইড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ দুটোই প্রযোজ্য। কিন্তু এখানে প্রযোজ্য নয়। এটাই আমার মূল বক্তব্য। তাই বাদিপক্ষ যেমন ন্যায়বিচার চান, আসামিপক্ষে আমরাও ন্যায়বিচার চাই। তবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের। সেটা তারা নিশ্চিত করবেন। যা দেশের ও পৃথিবীর মানুষ দেখবে বলে আশা করছি।


আরেকটা প্রশ্ন ছিল যে, একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বিদেশে ছিলেন, তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে- প্রয়োজনে আসেন। এসে বিচারের মুখোমুখি হন। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রনিযুক্ত এই আইনজীবী বলেন, শেখ হাসিনা কথাগুলো বললেও উনি আসেননি। আমিও সেটার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছি, যে কারণে উনি আসেননি একই কারণে শেখ হাসিনাও আসেননি। আমি মনে করি সন্দেহাতিকভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হননি রাষ্ট্রপক্ষ। তাই তারা খালাস পাবেন। সসম্মানে খালাস পাবেন বলেও আমার আমার প্রত্যাশা।


জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক খণ্ডনের শেষ দিন ছিল আজ। এদিন তাদের বিচারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।


মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com