পুলিশ হেফাজতে জনি হত্যা: ৩ পুলিশ কর্মকর্তার যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ১৩:২৭
পুলিশ হেফাজতে জনি হত্যা: ৩ পুলিশ কর্মকর্তার যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর পল্লবীতে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনি হত্যা মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান ও এএসআই কামরুজ্জামানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।


অপর আসামি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসানের যাবজ্জীবন দণ্ড কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।


সোমবার (১১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন।


আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী মো. আবদুর রাজ্জাক এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম। রায় ঘোষণার পুরো সময় মামলার বাদী নিহত ইশতিয়াকের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।


দণ্ডিত পাঁচ আসামির মধ্যে কামারুজ্জামান (তৎকালীন এএসআই) শুরু থেকে পলাতক। অন্য আসামি সুমন সাজাভোগ করে বেরিয়েছেন।


এর আগে, ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়ন হয়। ইশতিয়াক হোসেনকে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট মামলা করা হয়, যেটি ওই আইনে করা প্রথম কোনো মামলা। এই মামলায় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রায় দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ।


রায়ে পল্লবী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসান ও এএসআই কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে বাদী বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্য দুই আসামি পুলিশের সোর্স (তথ্যদাতা) সুমন ও রাসেলের সাত বছর কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন বিচারিক আদালত।


বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিন আসামি ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক পৃথক আপিল আবেদন করেন। তারা হলেন জাহিদুর রহমান, রাশেদুল হাসান ও রাসেল।


২০২১ সালে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। আর দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তিন আসামির আপিলের ওপর একসঙ্গে গত ৯ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।


ঘটনার বিষয়ে মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ইরানি ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. বিল্লালের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমন নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় সেখানে থাকা ইশতিয়াক ও তার ভাই ইমতিয়াজ তাকে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে সুমনের সঙ্গে দুই ভাইয়ের বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর সুমনের ফোন পেয়ে পুলিশ এসে ইশতিয়াক ও ইমতিয়াজকে ধরে নিয়ে যায় এবং থানায় নিয়ে দুই ভাইকে নির্যাতন করে। ইশতিয়াকের অবস্থা খারাপ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। তদন্তকালে এএসআই রাশেদুল কামরুজ্জামানকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই মামলায় ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত পাঁচ আসামি বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com