
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে দেশের প্রতিটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর একেকটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এই হিসেবে সারাদেশে সেনা ও নৌবাহিনীর মোট ৯২ হাজার ৫০০ জন সদস্য নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। এই বিপুল সংখ্যক বাহিনীর মধ্যে সেনাবাহিনীর ৯০ হাজার এবং নৌবাহিনীর ২ হাজার ৫০০ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেনা কর্মকর্তারা সেই বৈঠকে নির্বাচনী দায়িত্বে সেনা ও নৌ মোতায়েন সংক্রান্ত এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উক্ত বৈঠকের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
প্রেস সচিব আরও জানান, বৈঠকে নির্বাচনের আগের ৭২ ঘণ্টা এবং ভোটগ্রহণের পরের উদ্ভূত পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই সময়কালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় জনগণ ও স্বেচ্ছাসেবীদের কীভাবে কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়েও বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
একই সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সতর্ক করে বলেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতর ও বাহির থেকে বড় শক্তি কাজ করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হবে এবং হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। তিনি এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জিং আখ্যা দিয়ে বলেন, যত ঝড়ঝাপটা আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হবে। নির্বাচন বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে এবং বাইরে থেকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার করে ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটাকে দ্রুত সামাল দিতেই হবে এবং একটা অপপ্রচারের রচনা হওয়া মাত্র সেটা ঠেকাতে হবে, যেন ছড়াতে না পারে।
প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, কীভাবে ভোট প্রদান করতে হবে এবং কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে— এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
এই উদ্দেশ্যেই তিনি নির্বাচন কমিশন এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি সংখ্যক টিভিসি, ডকুমেন্টারি বা ভিডিও তৈরি করে তা যেন খুব দ্রুত ইউটিউবে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে, সেই নির্দেশ দিয়েছেন। সবাই যেন এটা দেখে নিজেরাই অনেক ক্ষেত্রে প্রস্তুত হতে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]