আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে কিসমিস, ছোলাবুটসহ বিভিন্ন জাতের ডালের আমদানি বেড়েছে। দেশের বাজারে এসব নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে আমদানি করছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা।

তবে গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি বলছেন পণ্য কিনতে আসা পাইকাররা। অন্যদিকে পণ্যগুলো খালাস করতে সব ধরনের সহযোগিতা করছে হিলি কাস্টমস।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিলি বন্দর ঘুরে জানা যায়, পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে এ বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা ছোলাবুট, কিসমিসসহ বিভিন্ন ডাল জাতীয় পণ্যের আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের আয় বেড়েছে।

বন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কিছুদিন আগে ছোলা, খেসারি, মসুর, মুগডাল প্রতিমাসে ৪-৫ ট্রাক আমদানি হলেও বর্তমানে প্রতিদিনই আমদানি হচ্ছে এসব পণ্য।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা হিলি বন্দরে এসে ডাল, ছোলা, কিসমিস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বন্দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ছোলাবুট ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, খেসারির ডাল ১০০ টাকা, মুগডাল ১১০ টাকা ও মশুরডাল ১২৮-১৩০ কেজি দরে।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ বন্দরে পণ্য কিনতে আসা পাইকাররা বলেন, আর কয়েক দিন পরে পবিত্র রমজান মাস শুরু। রমজান মাসে ছোলা সহ ডাল জাতীয় পণ্যের চাহিদা থাকে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর একটু দাম বেশি। এজন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য বিক্রি করতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে আমদানি অব্যাহত থাকায় খুচরা বাজারে কিছুটা দাম কমেছে।

তারা বলেন রমজান মাস সংযমের মাস এ মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীরা আরও বেশি আমদানি করবে। পাশাপাশি প্রশাসনও বাজার নিয়ন্ত্রণে কড়া নজরদারি রাখবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকলে সিন্ডিকেট তৈরি ব্যবসায়ীরা ছোলাবুটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করাতে পারবে না।

বন্দরের শ্রমিকরা বলেন, আগের তুলনায় বন্দরে ভারতীয় ট্রাকের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে ছোলাবুট ও ডাল জাতীয় গাড়ির সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। এতে আমাদের আয় ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

হিলি বন্দরের আমদানি রফতানি কারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে ছোলাবুটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কারণ রমজান মাসে প্রতিটি বাড়ি, হোটেল ও রেঁস্তোরায় ছোলাবুটের। এছাড়াও ডাল ও কিচমিচের চাহিদা থাকে। দেশের বাজারে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে ছোলাবুট, ডাল ও কিচমিচসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। আশা করছি আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম স্বাভাবিক থাকবে।

হিলি কাস্টমসের তথ্য মতে, জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত ১৮টি ভারতীয় ট্রাকে ৩৮০ মেট্রিক টন কিসমিস, ৫০ ট্রাকে ২ হাজার ৪৫ মেট্রিক টন মসুর ডাল, ২০ ট্রাকে ৮৬০ মেট্রিক টন মুগডাল, ১৩ ট্রাকে ৩৬৫ মেট্রিন টন মাসকালাই, ১০১ ট্রাকে ৩ হাজার ৭৪০ মেট্রিক টন খেসারি ডাল ও ১৫ ট্রাকে ৫২০ মেট্রিক টন ছোলাবুট আমদানি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হিলি বন্দরের জিরো পয়েন্টের টালি খাতার হিসেব মতে ছোলাবুট ভারতীয় ৭ ট্রাক, মসুর ডাল ২ ট্রাক, খেসারি ৬ ট্রাক, মুগডাল ২ ট্রাক বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে।

হিলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বিশেষ করে ছোলা, খেসারি ডাল, কিসমিস মুগডাল আমদানি পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্যগুলো ভারত থেকে বন্দরে আসার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দ্রুত খালাসের সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন।

বিবার্তা/রাব্বানী/এসএস