‘বাঁচার দাবি ছয় দফার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তি’
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ২০:১৩
‘বাঁচার দাবি ছয় দফার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তি’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘বাঁচার দাবি ঐতিহাসিক ৬ দফার মধ্যে ছিল বাঙালি জাতির মুক্তি। পিতা মুজিব বাঁচার কথা বলেছেন। কেন তিনি বাঁচার কথা বলেছেন- কারণ তিনি দেখেছেন ঐতিহ্যপূর্ণ এই অঞ্চল বিভিন্ন দিক থেকে বঞ্চিত, নিগৃহীত ছিল। সর্বশেষ পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিল পাকিস্তান এক অলিক রাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। পিতা মুজিব গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করা কাঁদামাটি জলের মানুষ। মানুষের দুঃখ, কষ্ট বুঝতেন। বুঝতেন বলেই এ অঞ্চলের মানুষকে নিগ্রহ থেকে মুক্তির পথে নিয়ে যেতে চাইলেন। সেই মুক্তির জায়গা, বাঁচার ঠিকানা ছয় দফা।’


৬ জুন, মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ঐতিহাসিক ছয় দফা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।


দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘কেন বঙ্গবন্ধু রচনা করলেন ছয় দফা। তাঁর আত্মোপলব্ধি থেকে তিনি এটি রচনা করলেন। আত্মোপলব্ধি এই- পূর্ব পাকিস্তানের শোষণ থেকে মুক্তি। প্রতিটি মানুষের মুক্তি। প্রতিটি মানুষ যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়, আত্মনির্ভর হয়, দারিদ্র বিমোচন হয়। পিতা মুজিব শুধুমাত্র ৬ দফার আগে তিনমাসে ৮ বার কারাগারে গেছেন। তাকে আটক করা হয়েছে। এমন করে জীবনে এক যুগেরও বেশি সময়ে একজন মানুষ ক্রমাগত কারাগারে কাটিয়েছেন। ৬ দফা হলো সেই মুক্তির রচনা। যেখানে কারাগারে বসে বসে পিতা-পুত্রের মুখ দেখতে পারতেন। স্ত্রী কন্যাদের আরও বেশি ভালোবাসা দিতে পারতেন। কিন্তু পিতা মুজিব সেই সময়ে রচিত করেছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মানচিত্র, লাল-সবুজের পতাকা। আর রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’


উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘ছয় দফার মুক্তির দাবিতে যা ছিল সেটির সঙ্গে মিল খুঁজে পাই বঙ্গবন্ধু কন্যার ভোট আর ভাতের অধিকারের আন্দোলনের। তারপরে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার আন্দোলন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতায় অতঃপর স্মার্ট বাংলাদেশ। অতি সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু কন্যা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সমতার কূটনীতির। পদ্মাসেতুর চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সময় অনেকে বলেছিল বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে মুখ থুবড়ে পড়বে কিনা। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়েনি। বাংলাদেশ মাথা উচুঁ করে, আত্মনির্ভরশীল হয়ে, স্বাবলম্বী হয়ে আত্মমর্যাদার পদ্মাসেতু নির্মাণ করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার সমতার কূটনীতির সাহসী যে পদক্ষেপ এটিই বাংলাদেশ, শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ানোর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এজন্য আমি বঙ্গবন্ধু কন্যাকে অভিনন্দন জানাই, স্বাগত জানাই, স্যালুট জানাই। ’


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আর বলেন, ‘বাঁচার দাবি থেকে ক্রমাগত আজকে যে সমতার কূটনীতির আত্মমর্যাদা-এই সবকিছু সম্ভব হয়েছে পিতা এবং কন্যার রক্তধারায়। বাংলাদেশে এর বাইরে যা ছিল তা ছিল অগণতান্ত্রিক ও সামরিক শাসন। যেখানে ছিল গণতন্ত্রহীনতা। বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন এই গণতন্ত্রহীনতা থেকে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য অশ্রুসজল চোখে দেশে ফিরেছিলেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পিতার রক্তাক্ত বাড়িতে ঢুকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমনকি মোনাজাতও করতে দেয়া হয়নি। সেদিন থেকে তিনি ঠিক করেছেন যেমন করে পশ্চিম পাকিস্তানের রোষানলে পড়ে বাঁচার দাবি বঙ্গবন্ধু করেছিলেন। একইভাবে গণতন্ত্রহীনতা, সামরিক শাসন থেকে মুক্তির জন্য ভোট এবং ভাতের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। এভাবেই দেশকে আত্মমর্যাদায় বলীয়ান করেছেন।’


বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। আলোচনা সভায় ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/রাসেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com