
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবক ও এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষকের উপর হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে লাঞ্ছিত করেছে।
৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠলে তার উপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন যাবৎ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ১০-১২ জন ছাত্রীকে ক্লাস চলাকালে কাছে বসিয়ে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন তাদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি ওই ছাত্রীদের হিজাব খুলে স্কুলে আসতে বলেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।
শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষককের এমন আচরণের বিষয়টি তাদের পরিবারের সদস্যদের জানালে অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক কামাল হোসেনকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে মরিচা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মরিচা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান বিদ্যালয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে অফিস কক্ষ থেকে বের করে মোটরসাইকেল যোগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় অভিভাবক ও বিক্ষুব্ধ জনতা কামাল হোসেনকে কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্প্ড় এবং লাথি মেরে লাঞ্ছিত করে। এ অবস্থায় শিক্ষক কামাল হোসেন জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন।
এ বিষয়ে বৈরাগীরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, পারিবারিক শত্রুতার কারণে এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ এনে হামলা করেছে। তবে এ ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানসহ এলাকাবাসী বসে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়েছে।
ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি এবং ইতোমধ্যে আমাদের কয়েকজন অফিসার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষককের ওপর হামলার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ বলেন, ফোনে আমি এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। খবর পাওয়ার পরই আমাদের থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অভিভাবক ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে।
বিবার্তা/শরীফুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]