
রাজবাড়ীর পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে তৈরি করা মডেল ঘরে সুফল পাচ্ছে কৃষকেরা। কৃষি অধিদপ্তর থেকে দেওয়া এসব ঘরে দীর্ঘদিন পেঁয়াজ সংরক্ষণের পাশাপাশি চলতি বছরে বেশি দামে বিক্রির করছেন চাষিরা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বাড়ির উঠান বা ফাঁকা জায়গায় মাত্র এক শতাংশ জমিতে টিন-বাঁশ, লোহা ও কংক্রিটের সমন্বয়ে তৈরি করা এ ঘরে ছয়টি তাপ নিয়ন্ত্রণ ফ্যান ও তিন স্তরের মাচা রয়েছে। চার লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা প্রতিটি ঘরে সংরক্ষণ করা যায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ মণ পেঁয়াজ। প্রতিটি ঘরে আলাদা আলাদা স্তরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন অন্তত পাঁচ কৃষক। এ ঘরে ৯ মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ ভালো থাকে।
মডেল ঘর পাওয়া বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি প্রতিবছর ৮ বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজ লাগাই। চারচালা টিনের ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতাম। বেশিরভাগ পেঁয়াজই নষ্ট হয়ে যেত। গত বছর সরকার থেকে ঘর পেয়েছি। আমিসহ আমার ভাই এই ঘরে প্রায় ৩শ মণ পেঁয়াজ রেখেছি। জুলাই মাস থেকে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছি। এখনো কিছু পেঁয়াজ ঘরে আছে। এবছর আমার একটা পেঁয়াজও নষ্ট হয় নাই। ভালো দামও পাইছি।
পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম মিলল বলেন, এই বছরই প্রথম সরকার থেকে দেওয়া মডেল ঘরে পেয়াজ সংরক্ষণ করছি।আমিসহ আমার দুই কাকা পেয়াজ রাখছি এই ঘরে। এখনো বিক্রি শুরু করি নাই।তবে পেয়াজের কালার আগের থেকে ভালো হইছে। একটা পেয়াজও পচে নাই।আমাদের এই ঘর ফাকা জায়গায় হওয়ায় আমরা ফ্যান চালাই নাই এখনো। মৌসুমে পেয়াজের দাম মণ প্রতি ১২০০ টাকা ছিলো। এখন বিক্রি করলে ২৫০০/৩০০০ করে বিক্রি করতে পারবো।এই ঘরে আমাদের উপকারি হইছে।
বালিয়াকান্দির চর-দক্ষিণবাড়ি এলাকায় কৃষক গোলাম মোস্তাফা বলেন, গত বছর মডেল ঘরে প্রায় ৩শ মণ পেঁয়াজ রাখছিলাম।পেঁয়াজের পছন্দ ধরছিল না কিছুটা ওজন করছিল। দামও ভালো পাইছিলাম।এক ঘরে আমি আর আমার ছেলে ভাগাভাগি করে পেঁয়াজ রাখছিলাম।এবছরও প্রায় ৩শ মণ পেঁয়াজ রাখছি।একটা পেয়াজেও পচন ধরে নাই।
মাঠ কর্মকর্তা জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মো. রাজিব খান বলেন, মডেল ঘরে পেঁয়াজ রেখে কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন, যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রত্যেক কৃষককে তো আর ঘর তৈরি করে দেওয়া যাবে না। ঘরগুলো তৈরির আরেকটি উদ্দেশ্য হল, কৃষকেরা যেন এই ঘর দেখে নিজেরাই তৈরি করতে করেন। এতে যেমন পেঁয়াজ নষ্ট হবে না পাশাপাশি তারা সুবিধামত সময়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
প্রতি বছর উৎপাদন করা পেঁয়াজের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এসব ঘর নির্মাণের মাধ্যমে পেঁয়াজ সংরক্ষণের পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনা সরকারের প্রধান লক্ষ্য বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
বিবার্তা/মিঠুন/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]