
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুরে ভেসে ওঠা শিক্ষার্থীর লাশের রহস্য উদঘাটনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১ টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতারাও আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এসময় তারা ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা ও আলো নিশ্চিত, প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি, সহ বিভিন্ন দাবি জানান।
এ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দুপুর দুইটায় প্রধান ফটকে তালা দিলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবাহী বাসগুলো আটকে পড়ে সেখানে। পরবর্তীতে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসে আন্দোনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা। আলোচনা শেষে সাড়ে চারটায় অবরোধ খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে সাজিদের গায়েবেনা জানাজা করেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরবর্তীতে আবারো অবস্থান কর্মসূ্চিতে যোগ দেন তারা। শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় ঘটনার দিনের কোন ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং অতি দ্রæত ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে শনিবার জিয়াউর রহমান হলের ফটকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে হল প্রশাসন। এছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান।
এদিকে ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করেছে দুই তদন্ত কমিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়করা।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদের আকস্মিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। দেশের বাইরে থাকায় সরাসরি আমি উপস্থিত থাকতে না পারা আমার জন্য দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পরপরই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আমি বলেছি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দাখিল করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করছে সেগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি। আমরা তাদের দাবির সাথে একমত। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং রুমে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়।
বিবার্তা/তাজমুল/শরীফুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]