
দুই ছেলে চার মেয়ে নিয়ে একসময় সুখের সংসার ছিলো ময়দান আলীর (৮০)। কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও প্রভাবশালী গার্হস্থ্য ছিলেন তিনি। বয়সের ভারে নুঁয়ে পরা শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা অসুখ। নানা কারণে ময়দান ও তার স্ত্রী জাহেদা বেগম সন্তানদের জমিজমা লিখে দিতে বাধ্য হন। কিন্তু ছেলেদের পাকা ঘরে স্থান হয়নি তাঁদের। শেষ বয়সে অপরিচ্ছন্ন গোয়ালঘরেই তাদের আশ্রয় হয়েছে।
ময়দান আলী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা। বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৫৭) উপজেলা ভূমি জরিপ কর্মকর্তা আর ছোট ছেলে রবিউল করিম রবি (৫৫) মাছ চাষি। দুজনেরই রয়েছে পাকা বাড়ি। ময়দানের চার মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হলেও বাবা-মাকে দেখতে এলে ভাইদের গালমন্দের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, অপরিচ্ছন্ন বিছানায়, অপরিস্কার দুর্গন্ধযুক্ত গোয়াল ঘরে রাখা চৌকির এককোনে শুয়ে আছেন ময়দান আলী। একপাশে রয়েছে খাবারের থালা বাসন অন্য পাশে রয়েছে রান্নার খড়ি ও গোখাদ্য। গোয়াল ঘরে কেনো এমন কথা শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ময়দানের স্ত্রী জাহেদা ও তারভাই মতিউর রহমান মতি সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতে গেলে ছোট ছেলে রবিউল করিম রবি দা (দেশীয় অস্ত্র) নিয়ে তেড়ে আসেন।
অসুস্থ ময়দান আলী জানান, গোয়াল ঘরেই তিনি ও স্ত্রী জাহেদা থাকেন। গোয়ালে থাকতে কষ্ট হলেও খাবারের অসুবিধা হচ্ছে না।
ময়দানের স্ত্রী জাহেদা বেগম বলেন, ছেলেরা জমিজমা লিখে নেয়ার কারনে মেয়েদের সেবা যত্ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ছোট ছেলে রবি ৫ শতাংশ জমি বেশি নিয়েছে। সেই জমি আমি ফেরৎ চাই।
বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে জানান,সন্তান হিসাবে মা-বাবার সাধ্যমত দায়িত্ব পালন করে আসছি। ছোটভাই রবি অধিকাংশ জমি লিখে নিয়েছে। তাঁরা ছোট ভাই রবির ঘরে কি অবস্থায় থাকেন তা জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ জানান, অভিভাবক রক্ষনাবেক্ষন আইনে প্রতিটি সন্তান তাদের বাবা-মাকে দেখভাল করতে বাধ্য। এর বাত্যয় হয়ে থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিবার্তা/জনি/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]