
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর ইলন মাস্কের নতুন পার্টি গঠনের উদ্যোগকে ‘হাস্যকর’ অ্যাখ্যা দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর উদ্দেশ্যে সমালোচনার নতুন তীর ছুড়েছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধ চূড়ায় তুলে মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল খোলার ঘোষণা দেওয়ার পরদিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেসময় তিনি নিউ জার্সির মরিসটাউন থেকে ওয়াশিংটনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এয়ার ফোর্স ওয়ানে উঠছিলেন।
“আমার দৃষ্টিতে তৃতীয় কোনো দল খোলা হাস্যকর। রিপাবলিকান পার্টিতে আমাদের অসাধারণ সফলতা আছে। ডেমোক্র্যাটরা পথ হারিয়ে ফেলেছে, কিন্তু এটা সবসময় দ্বিদলীয় ব্যবস্থাতেই সীমাবদ্ধ থেকেছে, আমার মনে হয় তৃতীয় একটি দল খোলায় কেবল বিভ্রান্তিই যোগ হবে,” সাংবাদিকদের ট্রাম্প এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। “মনে হচ্ছে, আমেরিকার রাজনৈতিক ব্যবস্থা দুই দলকে মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে। তৃতীয় দল কোনোদিনই সফল হয়নি, কাজেই মাস্ক চাইলে এটা নিয়ে মজা করতেই পারেন, কিন্তু আমার দৃষ্টিতে ব্যাপারটা হাস্যকর,” বলেছেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার কিছুক্ষণ পর নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প টেসলাপ্রধানকে নিয়ে আরও বলেছেন।
“ইলন যে পুরোপুরি পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েছেন, গত ৫ সপ্তাহে তিনি যে বিপর্যস্ত অবস্থায় চলে গেছেন তা দেখে আমি মর্মাহত,” লিখেছেন ট্রাম্প।
শুক্রবার কর কমানো ও বিপুল ব্যয়ের ‘বিগ, বিউটিফুল বিলে’ স্বাক্ষর করে একে আইনে পরিণত করেন ট্রাম্প। পরদিনই মাস্ক এর প্রতিক্রিয়ায় ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে তৃতীয় একটি দল খোলার ঘোষণা দেন।
ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে বলেও তিনি সতর্ক করেছেন।
“তিনি যদি ঋণ ৫ লাখ কোটি ডলার বাড়াবেনই, তাহলে ডিওজিই-র দরকার কি ছিল?” রোববার এক্সে এমনটাই লিখেছেন তিনি।
ডিওজিই বলতে তিনি বুঝিয়েছেন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সিকে; ট্রাম্প এ দফায় ক্ষমতায় আসার পর সরকারি কর্মীবাহিনীর আকার ছোট করতে এ বিভাগটি খুলেছিলেন, শুরু থেকে কয়েক মাস এর নেতৃত্বে ছিলেন মাস্ক।
২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে কোটি কোটি ডলার খরচ করা মাস্ককে নতুন প্রশাসনের প্রথম কয়েক মাসে নিয়মিতই ওভাল অফিস ও অন্যত্র প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা গেছে।
এই ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ নিয়েই দুইজনের মধ্যে মতপার্থক্য ও বিভেদ তৈরি হয় বলে মনে করা হচ্ছে। মাস্ক পরে এ বিভেদ কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন, লাভ হয়নি।
ট্রাম্প বলছেন, নতুন আইনে টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত সবুজ জ্বালানি ভর্তুকি বা কর-ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। এতেই মাস্ক অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
এদিকে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের নতুন এই আইন ফেডারেল বাজেটে ঘাটতি বাড়িয়ে দিয়ে মার্কিন অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি করবে।
টেসলাপ্রধান বলেছেন, তার নতুন পার্টির লক্ষ্য হবে আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান সেইসব আইনপ্রণেতাদের হারানো, যারা ট্রাম্পের এই ‘বিগ, বিউটিফুল বিলে’ সমর্থন দিয়েছিল।
মাস্কের সমালোচনার পাল্টায় ট্রাম্পও টেসলা ও স্পেসএক্স যে সরকারি চুক্তি ও ভর্তুকির মাধ্যমে কয়েক বিলিয়ন ডলার পায়, তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]