
নড়াইলে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের প্রধান সর্দার তুষার শেখ ওরফে গোল্ড হৃদয়কে (৩৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব ও লোহাগড়া থানা পুলিশ।
রবিবার (৬জুলাই) রাত ৮টার দিকে লোহাগড়া থানার সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, লোহাগড়া থানার ওসি মো. শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রবিবার গোপন সংবাদের ভিক্তিতে ভোর রাতে তুষারকে ঢাকার বিমান বন্দরের আজমপুর এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে র্যাব-৪ ও লোহাগড়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। তুষার শেখের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বর্ণালংকারসহ তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম ওরফে জান্নাতকে গ্রেফতার করে।
তুষার লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াও গ্রামের ওয়াদুদ শেখের ছেলে। রোকেয়া বেগম ওরফে জান্নাত খাগড়াছড়ির ইসলামপুরের নূর মাঝির মেয়ে এবং তুষার শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী।
ওসি আরোও জানায়, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি লোহাগড়া উপজেলার ঘাঘা গ্রামে প্রবাসী বাবলু শেখের বাড়িতে একটি
সংঘবদ্ধ ডাকাত দল প্রবাসীর স্ত্রী শেফালীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুট করে। ঘটনার পর শেফালী বেগম বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই ডাকাতির ঘটনার ৪ দিনের মাথায় একই
উপজেলার নোয়াগ্রামে দ্বিতীয় দফায় ফের ডাকাতির ঘটনা ঘটে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল হাসান বিশ্বাস বাড়িতে। সেখানে তাদের নব্য বিবাহিত মেয়ে জামাই ও পরিবারের বাকি সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুট করেন ডাকাত দল। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় মামলা করেন।
দুটি ডাকাতি মামলার সূত্র ধরে লোহাগড়া থানা পুলিশ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূলহোতা তুষার শেখ ওরফে গোল্ড হৃদয়ের সম্পৃক্ততা পায়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে ৬ জুলাই রাতে ঢাকার বিমান বন্দরের আজমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪ ও লোহাগড়া থানা পুলিশ।
তুষারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ডাকাতিকালে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকারসহ তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম ওরফ জান্নাতকে গ্রেফতার করে। ডাকাতির সময় লুণ্ঠিত একটি স্বর্ণের চেইন ও কানের একজোড়া দুল উদ্ধার করা হয়।
ডাকাত সর্দার তুষার বলেন, আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গেলে ওই চত্বরে আসমা বেগম নামে এক ভারির সাথে তার পরিচয় হয়। ভাবি বেশ কয়েকটি বাড়ির তথ্য দেন। পরে তার ফোন নাম্বার রাখি আর বাড়িগুলোতে নজর রাখতে বলি। সুযোগ বুঝে আসমার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘাঘা গ্রামে প্রবাসী বাবলু শেখের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা করি। রাতে বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে পাঁচুড়িয়া গিয়ে নড়াগাতীর জাকির ও ওদুদসহ আরও বেশ কয়েক জন মিলিত হয়ে
রাত ১ টার দিকে প্রবাসীর বাড়িতে ঢুকি। সেখান থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণ গহনা নিয়েছি আসি।
পরে নোয়াগ্রামে আসমার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাকিল, রহমতকে সঙ্গে নিয়ে আর্মির বাড়িতে গ্রিল কেটে ঢুকি। সেখান থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণ ও গহনা নিয়ে নিয়েছি। পরে যার যার ভাগের টা তাকে দিয়েছি।
আসমাকে দশ হাজার করে দিয়েছি, আর বাকিদের সমান ভাগ। স্বর্ণ ও গহনা বিভিন্ন জায়গাতে বিক্রি করেছি। দুই ডাকাতির পর আর কোনো জায়গাতে কিছু করি নেই।
লোহাগড়া থানার ওসি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূলহোতা তুষার শেখের তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে, তদন্তের স্বার্থে আপাতত সব প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে এবং ডাকাত দলের বাকি সদস্যদের ধরতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বিবার্তা/শরিফুল/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]