
ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা ও গফরগাঁও উপজেলার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) অফিসের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে ট্রান্সফরমার অবৈধভাবে সরবরাহ ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পিডিবির এক কর্মীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা ইতোমধ্যেই জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ভালুকা ও গফরগাঁও অফিসের কিছু কর্মকর্তা একে অপরের নামে চিঠি ইস্যু করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সরকারি ট্রান্সফরমার স্থানান্তরের মাধ্যমে কিছু অসাধু ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। ঈদের আগে ভালুকা অফিস থেকে গফরগাঁও অফিসের নামে চিঠি ইস্যু করে একটি ২০০ কেভিএ ট্রান্সফরমার সরানো হয়, যার সিরিয়াল নম্বর ১০৩ এবং কন্ট্রাক্ট নম্বর ২৭.১১.০০০০.৩০৪.২৪.২০.২৪.১৭।
এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে ভালুকা অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ারুজ্জামান, গফরগাঁও অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রাসেল সরকার (যিনি দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ ভালুকা অফিসে কর্মরত), সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নোমান (গফরগাঁও অফিস) এবং লাইনম্যান মোঃ সুরুজ (ভালুকা অফিস)। অভিযোগে বলা হয়েছে, লাইনম্যান হয়েও মোঃ সুরুজ অর্ধকোটি টাকারও বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এছাড়া এই চক্রে জড়িত রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে গফরগাঁওয়ের সানী এন্টারপ্রাইজের সানী, মম এন্টারপ্রাইজের মালিক নওশাদ, এবং ভালুকার ফাহিম এন্টারপ্রাইজের অন্তর। অভিযোগে আরও বলা হয়, এই ঠিকাদারদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং তারা নিজেদের সুবিধামতো বদলি ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। এমনকি ভালুকা, গফরগাঁও ও ত্রিশাল পিডিবি অফিসের তিনজন নির্বাহী প্রকৌশলীর মধ্যে পালাক্রমে পোস্টিং বজায় রাখার জন্য একটি অঘোষিত সমঝোতার কথাও অভিযোগে উঠে এসেছে।
এ বিষয়ে ভালুকা অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ারুজ্জামান জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কেউ প্রমাণ দিতে পারবে কি না জিজ্ঞেস করে তিনি জানান, তাদের প্রয়োজনে তারা এক অফিস থেকে অন্য অফিসে জিনিসপত্র নিয়ে ব্যবহার করেন। বিক্রি করার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
গফরগাঁও অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা প্রয়োজনে এক অফিসের জিনিস অন্য অফিসে নিয়ে যাই, আমরা ব্যবহার করি। অফিসের যথাযথ নিয়ম মেনে নিয়ে যাই, সেটা যেখানে প্রয়োজন ব্যবহার করি।
পিডিবি ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, "বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।"
এদিকে এসব অভিযোগের পর পিডিবি’র অভ্যন্তরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সচেতন মহল ও এলাকাবাসী দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
বিবার্তা/সাজ্জাদুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]