
পঞ্চগড়ে আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে উপড়ে গেছে কয়েক হাজার গাছ, ভেঙে গেছে বাসা বাড়ি। বিঘ্ন ঘটেছে বিদ্যুত ও ইন্টারনেট পরিসেবা।
সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে পঞ্চগড় পৌর এলাকা এবং উপজেলা সদরের মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তবে মঙ্গলবার সকালেও সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি প্রশাসন।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড় যে কোন ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগমুক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে নিকট অতীতে বন্যা, জলোচ্ছাস, ঘূর্ণিঝড়ের কোন ঘটনা নেই। তবে সোমবার রাত ৯টা ৩০ মিনিট থেকে বৃষ্টি ঝরছিল। মাঝখানে একটু বিরতি দিয়ে আবার বৃষ্টির সাথে শুরু হয় আকস্মিক ঝড়।
ঝড়ে পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার, মসজিদ পাড়া, পুরাতন ক্যাম্প, রামের ডাংগা, রাজনগর, কায়েতপাড়া, তুলারডাংগা, নিমনগর, ইসলামবাগ, জালাসীপাড়াসহ বিভিন্ন মহল্লা এবং উপজেলা সদরের মাগুড়া ও গারিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে গেছে। মাগুড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের ঘুটিও পরে গেছে। গাছ পড়ে অনেকের বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে ভেঙে গেছে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সীমানা প্রাচীর। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সদর থানার বিভিন্ন অবকাঠামো। বিভিন্ন কক্ষের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে।
এদিকে ঝড়ের কারণে সোমবার রাত থেকে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ইন্টারনেট পরিসেবাও বিঘ্ন ঘটেছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শহরের কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন চালু হলেও অধিকাংশ এলাকায় চালু করা যায়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি সড়কে পরে বিভিন্ন এলাকায় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পৌরসভা রাজনগর এলাকার ষাটোর্ধ্ব ছোটু বেওয়া বলেন, আমার জীবনে এমন ঝড় দেখিনি। রাতে বৃষ্টির সাথে হঠাত করে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ে আমার বাড়ির আশে পাশে অনেক গাছে ভেঙে পরেছে। এতে অনেক বাড়িঘর ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এলাকায় অনেকের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। ভাগ্যিস আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার বাড়িটি বেঁচে গেছে।
রামের ডাংগা মহল্লার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ির উপড়ে তিনটি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে আমার একটি সেমীপাকা ঘরের দেওয়াল ভেঙে গেছে। বড় বড় গাছ পড়ে আমাদের এলাকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। রাত থেকে বিদ্যুত নেই। এমন ঝড় এর আগে কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না।
ঝড়ে কললিত রামের ডাংগা এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ইকবাল হোসাইন। এসময় তিনি বলেন, গতকাল রাতে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ ঝড় বয়ে গেছে। এখানে সাধারণত এমন ঝড় দেখা যায় না। আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। এরপর যে সকল গরীব ও দু:স্থ মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, তাদের সামান্য হলেও সহায়তা চেষ্টা করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, রাতে পঞ্চগড় পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা এবং সদর উপজেলার মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে আকস্মিক ঝড় বয়ে যায়। পৌরসভাসহ দুই ইউনিয়নে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির সঠিক পরিমান নিরুপন করতে ইউনিয়ন পরযায়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। সব তথ্য পাওয়া গেলে ঝড়ে সঠিক পরিমান জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/গোফরান/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]