ভাসমান ড্রামের সেতুতে দুঃখ ঘুচলো ৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৮
ভাসমান ড্রামের সেতুতে দুঃখ ঘুচলো ৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সানিয়াজান নদীর উপরে ড্রামের সাহায্যে ভাসছে ২০০ ফুট দীর্ঘ ভাসমান সেতু। ড্রাম দিয়ে সেতু নির্মাণের ফলে দুঃখ ঘুচলো ৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের। পাশাপাশি যোগাযোগ সহজ করেছে এই সেতু।


স্থানীয় সবার সহযোগিতায় ও বিএনপির নেতৃত্বে প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর বাঁশের চাটাই জোড়া লাগিয়ে সেতুটি নির্মাণ করেছেন। দৃষ্টিনন্দন সেতুটি দেখতে প্রতিদিন এখানে অনেকে ভিড় করছে। এমন ভাসমান ড্রামের সেতু সবার নজর কেড়েছে। ভোগান্তি কমেছে প্রায় তিন গ্রামের ২০ হাজার মানুষের। সেতু নির্মাণ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইউনিয়ন বিএনপি'র নেতৃবৃন্দ। ভাসমান সেতু নির্মাণের খরচ হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা।


পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে সানিয়াজান নদীর ওপর ড্রামের সেতুটি গত ৩ মার্চ উদ্বোধন করেন বাউরা ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি ডাক্তার শামসুল আলম। উদ্বোধনের পর থেকে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা যাতায়াত শুরু হয়েছে। এতে তিন গ্রামের মানুষ খুশি।


ড্রাম সেতুটি নির্মাণ করেছেন ওই গ্রামের প্রায় ১৫ জন সাধারণ মানুষ। সেতু নির্মাণের ব্যবহার হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রাম, বাঁশ, লোহার অ্যাঙ্গেল, দরি ও কুনা।


জানা যায়,পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সানিয়াজান নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় প্রতি বছর তিন গ্রামের মানুষসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষের কষ্টে চলাচল করতো। বাঁশের সাকো থাকলেও প্রতিবছর বন্যায় ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানে ব্রিজ বা সাঁকো না থাকায় হাঁটু বা কোমর পানিতে নেমে নদী পার হতে হতো মানুষের। শিক্ষার্থীসহ সবার এই ভোগান্তি দেখে স্থানীয় বাউরা ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে সবার সহযোগিতায় গ্রাম গঞ্জের শুরু হয় বাঁশ সংগ্রহ। সংগ্রহীত কিছু বাঁশ বিক্রি করে কেনা হয় রাবারের ড্রাম।


১০০টি ড্রাম ও শতাধিক বাঁশের সমন্বয়ে একটি ভাসমান ব্রিজ নির্মাণ করেন। তাদের এমন উদ্যোগ এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।


স্থানীয়রা জানান, গেল বন্যার পর থেকে এই নদীতে কোন ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়। পরে বিএনপি নেতৃবৃন্দে ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তৈরি হয় ভাসমান ড্রাম ব্রিজ। এই ড্রাম সেতুতে অনেক মানুষ সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করছে মানুষের অনেক উপকারিতা হচ্ছেন।


স্থানীয় বাসিন্দা রিফাত হোসেন বলেন, বন্যায় প্রতি বছর এখানকার মানুষের কষ্টপোহাতে হয়। তাই সবার সহযোগিতায় বিএনপির ছাত্রদল নেতারা মিলে এবার ড্রাম দিয়ে ভাসমান সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে বন্যার সময় কষ্ট করতে না হয়।


স্থানীয় আজিজুল ইসলাম বলেন, বন্যার সময় নদীর পানি যতই বাড়বে ড্রাম গুলো ভেসে উঠবে। এতে চলাচলের কোন কষ্ট হবে না তাই আমরা ড্রাম কিনে এই সেতুটি করেছি।


হামির উদ্দিন গ্রামার স্কুলের শিক্ষার্থী আয়ান বলেন, এই সেতুটি নির্মাণে আমরা খুব সহজেই স্কুল কলেজে যেতে পারি। আগে এই পথ দিয়ে অনেক কষ্টে ভিজে স্কুলে যেতাম, এখন আর ভিজে যেতে হয় না। খুব কম সময়ে আমরা স্কুলে যেতে পারি।


এ বিষয়ে বাউড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডাক্তার শামসুল আলম বলেন, এখানে ব্রীজ না থাকায় প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষ কষ্টে পড়েন। তাই আমরা সবার সহযোগিতায় বিএনপি নেতা কর্মীদের নিয়ে এই ভাসমান সেতুটি করেছি। এই সেতু দিয়ে শত শত সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করছে।


পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিল্লুর রহমান বলেন, এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি তাই এই ভাসমান সেতুর বিষয়ে জানি না। তবে খোঁজ খবর নিব।


বিবার্তা/হাসানুজ্জামান/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com