দখলদার বনাম মালিক : কর্ণফুলীতে সংঘর্ষ, দুই পক্ষের মামলায় ১১ আসামি
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৫, ২২:৪৯
দখলদার বনাম মালিক : কর্ণফুলীতে সংঘর্ষ, দুই পক্ষের মামলায় ১১ আসামি
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষে চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। দু'পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে।


গত রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইছানগর গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ।


আহতরা হলেন-এস এম ফয়সালের ছেলে শেখ মোহাম্মদ নেওয়াজ (১৬), ফয়সালের ভাতিজা সিরাজুল মনির (২০), প্রতিপক্ষের মৃত হাছান আলীর ছেলে সালাউদ্দিন (৪০) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৫)। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।


এ ঘটনায় এস এম ফয়সাল বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন (মামলা নং-১৯)।


অভিযুক্তরা হলেন-মৃত হাছান আলীর ছেলে আব্বাস উদ্দিন (২৬), সাহাব উদ্দিন (৪৮), নুর উদ্দিন (৪৬), সালাউদ্দিন (৪৩) এবং সাহাব উদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান ওরফে আসিফ (২০)। এরা কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইটানগর এলাকার।


এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা এস এম ফয়সালের দখলীয় জায়গায় প্রবেশ করে বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে ফেলে এবং শ্রমিকদের মারধর করে ৫০ হাজার টাকার নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট করে। বাধা দিতে গেলে শেখ মোহাম্মদ নেওয়াজ ও সিরাজুল মনিরকে কিরিচ দিয়ে কোপানো হয়। বাদী ফয়সালকে মারধর ও তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগও আনা হয়েছে। এছাড়া, মামলা তুলে নিতে আসামিরা তাকে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।


অন্যদিকে, শামসুদ্দিন (৪৪) বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পাল্টা মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং-২৪)।


অভিযুক্তরা হলেন-চরলক্ষ্যা ০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তমিজ গোলাল চেয়ারম্যান বাড়ির তমিজ গোলালের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াছিন (৪৭), মোহাম্মদ আরাফাত (৪০), চরপাথরঘাটা ইছানগর গ্রামের মৃত শেখ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ছেলে এস এম ফয়সাল (৫৫), সিরাজুল মনির (২০), শেখ মোহাম্মদ নেওয়াজ (১৮) ও পশ্চিম চরলক্ষ্যা এলাকার মোহাম্মদ রাকিব (৩২)। শামসুদ্দিনের অভিযোগ, আসামিরা কিরিচ দিয়ে আব্বাস উদ্দিন ও সালাউদ্দিনকে আঘাত করলে তারা গুরুতর আহত হন।


এতে আব্বাসের মাথায় ৭টি ও সালাউদ্দিনের কণ্ঠনালীতে ৪টি এবং মাথায় ৩টি সেলাই দিতে হয়েছে। এছাড়া, নারীদের এলোপাতাড়ি মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগও আনা হয়েছে। মামলা করলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।


এস এম ফয়সাল দাবি করেছেন, ২০১৩ সালে তার ভাই মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরকে প্রতিপক্ষ হত্যা করেছিল। সে ঘটনায় তিনি ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষ বারবার হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।


এমনকি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০-৪০ জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি করেন।


অপরদিকে, আব্বাস উদ্দিনের বড় ভাই শামসুদ্দিন বলেন, 'ফয়সালরা জোরপূর্বক জমি দখল করতে গেলে সংঘর্ষ হয়। আমার দুই ভাইকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তারা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাই আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি।'


কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বলেন, 'জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষই মামলা করেছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।'


বিবার্তা/জাহেদ/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com