
দিনাজপুরের খানসামার পূর্ব মাদার ডাঙ্গা এলাকার মেছের মন্ডলের ছেলে নিজাম উদ্দিন (৬২)। দ্রবমূল্যের উর্দ্ধগতির সময়েও ৫ টাকা দরে মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করে সুখে শান্তিতে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি৷ এখন থেকে প্রায় ২১-২২ বছর থেকে পাড়ায় পাড়ায় মিষ্টি ও নিমকি ফেরি করে বিক্রি করেছেন তিনি। মিষ্টি ও নিমকি তৈরির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে লাভ কমলেও বিক্রি কমেনি তার। তাই তো শুধু নিজের ভাগ্য বদলেই নয় তার এই ব্যবসা সাড়া ফেলেছে পুরো এলাকায়।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপরে কথা হয় নিজাম উদ্দিনের সাথে। দীর্ঘসময় ধরে নিজাম জানিয়েছেন তার সফলতার গল্প।
নিজাম জানান, যুবক বয়সে তিনি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও ময়মনসিংহ থেকে তার এক ভগ্নীপতি এই এলাকায় এসে বসবাস শুরু করলে প্রায় ২১-২২ বছর পূর্বে তার হাত ধরেই মিষ্টি ও নিমকি তৈরীর হাতেখড়ি হয়। পরবর্তী সময়ে নিজেই শুরু করেন মিষ্টি-নিমকির ব্যবসা। এরপর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
এদিন সরেজমিনে তার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী সাহারা বেগম ও ছোট ছেলে সোলাইমান ইসলামসহ মিষ্টি ও নিমকি তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নিজাম উদ্দিন। প্রতি পিস ৫ টাকা দরে টাটকা ও সুস্বাদু মিষ্টি ও প্রতি পিস ৫ টাকা দরে গরম গরম নিমকি ক্রয় করতে তার বাসায় অনেকেই এসেছেন। নিজাম উদ্দিনের তৈরী এই মিষ্টি প্রতি কেজি ৫৫-৬০ টি ও নিমকি প্রতি কেজিতে প্রায় ৬০ টি হয়। বর্তমানে প্রতি পিস ৫ টাকা ও প্রতি ২৫০-২৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি । এতে উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি সপ্তাহে তাঁর ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লাভ হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, নিজ এলাকা থেকে গাভীর দুধ সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করে পরিবারের সদস্যের সহায়তায় নিয়মিত মিষ্টি ও নিমকি তৈরী করেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৫-১৬ কেজি মিষ্টি ও ১৫-১৬ কেজি নিমকি তৈরী ও বিক্রি করেন নিজাম উদ্দিন। এই পেশার শুরুতে জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় মাত্র ১ টাকা দরে প্রতি পিস মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করলেও বর্তমানে সেটি ৫ টাকায়। করোনা কালে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে মিষ্টি ও নিমকির দামও বৃদ্ধির কথা জানান তিনি। এই পেশা থেকে তার উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসারের ভরণপোষণসহ সুখেই দিন কাটে বলে জানান নিজাম৷
মিষ্টি ও নিমকি তৈরীকারক নিজাম উদ্দিন বলেন, সৃষ্টিকর্তার রহমতে প্রতিদিন ভালোই মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করি। আমার কাছে রেগুলার কিছু গ্রাহক আছে যারা নিয়মিতই মিষ্টি-নিমকি ক্রয় করেন। এতে অর্থ উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চলছে। বর্তমান সময়ে দুধ, চিনি, ময়দা ও ভোজ্যতেল মিষ্টি ও নিমকি তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে। তবুও মান ঠিক রেখে নিয়মিত মিষ্টি ও নিমকি তৈরী ও বিক্রয় করতেছি।
স্থানীয় যুবক রহিদুল ইসলাম রাফি বলেন, নিজাম চাচার মিষ্টি-নিমকির ভালোই স্বাদ। আমরা প্রায়ই ওনার তৈরী মিষ্টি ও নিমকি খাই, ভালোই লাগে।
বিবার্তা/জামান/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]