লালনের তিরোধান দিবসে পূর্ণসেবা দিয়ে শেষ হয়েছে সাধুসঙ্গ
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:৩৫
লালনের তিরোধান দিবসে পূর্ণসেবা দিয়ে শেষ হয়েছে সাধুসঙ্গ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।


১৮ অক্টোবর, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পূর্ণসেবা গ্রহণের মধ্যদিয়ে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান শেষ হয়। কুষ্টিয়া জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শারমিন আখতার সাধুদের মাঝে পূর্ণসেবা পরিবেশন করে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।


এসময় জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) মো. জাহাঙ্গীর আলম সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। লালন সাঁইজির তিরোধান দিবসে তাঁর আখড়াবাড়িতে আসা সাধু ও ভক্তরা বৃহস্পতিবার বিকেলে অধিবাস ও গুরুকর্ম দিয়ে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান শুরু করে।


১৮ অক্টোবর, শুক্রবার সকালে দৈন্যবাণী পরিবেশ ও বাল্যসেবা এবং বিকেলে পূর্ণসেবা দিয়ে তা শেষ হয়। সাধুসঙ্গ শেষ হলে আখড়াবাড়ি থেকে অনেক ভক্ত ও সাধুরা লালন ধাম ত্যাগ করলে এখনও আখড়াবাড়িতে রয়ে গেছেন অসংখ্য সাধু, লালন ভক্ত ও অনুসারীরা। তবে তিনদিনের লালন উৎসব চলবে শনিবার পর্যন্ত।


লালন উৎসবকে ঘিরে দেশ বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে জড়ো হয়েছেন অসংখ্য বাউল, সাধু ও লালন ভক্ত। আখড়াবাড়ির পাশে কালিগঙ্গা নদীর পাড়ে লালন মঞ্চে সন্ধ্যায় রয়েছে লালন সাঁইজির জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা এবং রাতভর চলবে আমন্ত্রিত শিল্পীদের পরিবেশনায় লালনের গান। এ উপলক্ষে বসেছে মেলা। শেষ হবে আগামীকাল শনিবার।


লালন তিরোধান দিবসের সাধুসঙ্গ শেষ হলেও লালন উৎসব ও মেলা শেষ না হওয়ায় কুষ্টিয়ায় লালন মাজারের আশে পাশের সব পথ দিয়ে আসা নানা ধর্ম, জাত ও মতের মানুষের স্রোত মিশতে দেখা গেছে আখড়াবাড়ির আঙিনায়। একতারা, দোতরা, ডুগি-তবলা, খমক, খঞ্জনি আর বাঁশির সুরে আজও মুখোরিত ছিল সাঁইজির আখড়াবাড়ি। দরাজ গলাই লালনের গানে মেতে উঠতে দেখা গেছে বাউল সাধুদের।


লালন সাঁইজি তাঁর বাণীতে বলেছেন ‘যে নিজেকে চিনেছে, সে তার রবকে চিনেছে’ তাই স্রোষ্টার সান্নিধ্য পেতে হলে নিজেকে চিনতে ও জানতে হবে, হতে হবে সহজ মানুষ, ভজতে হবে মানুষকে। তবেই মিলবে স্রোষ্টার দেখা। আর এজন্য প্রয়োজন সহজ মানুষের সান্নিধ্য। আবার ফকির লালন সাঁইজি নিজেকে দীনহীন কাঙ্গাল ভেবে মানুষকেই সবার উর্দ্ধে স্থান দিয়েছেন। তাইতো স্রোষ্টার সান্নিধ্য লাভ করতে হলে সৃষ্টির সেরা জীব মানব সাধন প্রয়োজন। আর এমনটাই মনে করেন সাইজির ধামে আসা প্রবীন সাধু শামসুল ফকির।


‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ লালন সাঁইজির এই মর্মবানীকে প্রতিপাদ্য করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তিনদিন ব্যাপী তিরোধান দিবস অনুষ্ঠানের আজ শুক্রবার ছিল দ্বিতীয় দিন।


সাঁইজির টানে বিনা আমন্ত্রনে দেশ-বিদেশ থেকে লালন উৎসবে যোগ দিয়েছেন অসংখ্য সাধু. লালন ভক্ত ও অনুসারীরা। মাজারে এসে তারা ভাবতত্বে হয়েছেন মোহিত।


বিবার্তা/শরীফুল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com