
বাংলাদেশে মাদারীপুরে 'বিদাত' আখ্যায়িত করে একদল ইসলামপন্থীর একটি বটগাছ কেটে ফেলার ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। যদিও বিশাল গাছটি সম্পূর্ণ কেটে ফেলার আগেই স্থানীয় প্রশাসন তাতে হস্তক্ষেপ করেছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার শিড়খাড়া ইউনিয়নে আলম মিরের কান্দি এলাকায় শতবর্ষী বটগাছ কেটে ফেলার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গাছটির শাখা প্রশাখা অনেক কাটার পর মূল গাছটি পুরোপুরি কাটা শেষ করার আগে প্রশাসন তা বন্ধ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেছেন, ঘটনার পর তারা গাছের মালিকসহ অনেকের সাথে কথা বলেছেন।
"আমরা কথা বলছি। এখানে অন্য অন্য কোনো বিষয় আছে কি-না সেটা আমরা খুঁজে বের করছি। তেমন কিছু পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে," বলছিলেন তিনি।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে 'মুসল্লি' পরিচয় ধারী একদল ব্যক্তি করাত দিয়ে বিশাল বটগাছের বিভিন্ন অংশ কাটছেন। এর শাখা গুলো কেটে ফেলার পাশাপাশি মূল গাছও কিছুটা কেটে ফেলা হয়েছে বলে বলছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল কালাম আজাদ।
"এ গাছটি অনেক পুরনো গাছ। নদীর পাড়ে সুন্দর জায়গায়। দীর্ঘকাল ধরেই দেখছি কেউ এর ছায়ায় আশ্রয় নেয়, আবার কেউ বা মানত করে, শিন্নি দেয়। কেউ প্রার্থনা করে। কেউ লাল কাপড় বাধে। এ নিয়ে কোনদিন কারও সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখন একদল বলছে এগুলো সব শিরক। এলাকাবাসী দেখেছে তারাই গাছ কেটেছে," বলছিলেন তিনি।
তিনি জানিয়েছেন, গাছটি কেটে ফেলার খবর শুনে আজ বহু মানুষ সেটি দেখতে এসেছিলেন। তবে শাখা প্রশাখা কাটলেও যারা কাটার জন্য এসেছিলো তা মূল গাছটি পুরোপুরি কাটা শেষ করতে পারেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে গাছটি কাটার কারণ শুধু ধর্মীয় বলতে রাজি নন স্থানীয় কেউ কেউ। তারা দিয়েছেন যে গাছটি বিক্রি করতে এর মালিককে বাধ্য করার জন্য ধর্মীয় ইস্যু সামনে এনে পুরো ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।
জানা গেছে, শতবর্ষী গাছটি নিয়ে এলাকায় বেশ কৌতূহল আছে এবং অনেকেই নিজেদের অনেক ধরনের বিশ্বাস নিয়ে নানা আচারও পালন করতো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ এ কে এম খাদেমুল হক বলছেন এসব ঘটনাগুলোকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা হিসেবেই দেখা উচিত বলেই তিনি মনে করেন। কারণ রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তারা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছেন এবং তাদের এসব ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে ইসলাম বিষয়ক লেখক ও বিশ্লেষক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ বলছেন ধর্মীয় অঙ্গনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই 'অতি অধিকার বোধে'র এবং নিজেরাই তাৎক্ষণিকভাবে সবকিছুর সমাধান করে নেয়ার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]