
দিনের বেলা ঝলমলে রোদ থাকলেও উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মাঝারি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। আবারও জেকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পুরো এলাকা ।
৪ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।
গত এক সপ্তাহ ধরেই এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ১২ হতে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে বিরাজ করলেও গত পাঁচ দিন যাবৎ আবারও তা কমতে শুরু করে ।
স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তাপমাত্রা ৮ হতে ১০ এর মধ্যে বিরাজ করলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ হতে ৮ এর মধ্যে বিরাজ করলে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৬ হতে ৪ অথবা এর নিচে আসলে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সেই সূত্র অনুযায়ী গত দুইদিন ধরেই এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে । তবে দুই একদিন তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
হিমালয় কন্যা নামে খ্যাত দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেকে বসেছে শীত। সাথে হিমালয় থেকে প্রবাহিত হওয়া হিম শীতল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাত যত গভীর হয় এর তীব্রতা ততই বাড়তে থাকে। পরদিন সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর হতে বের হয় না ।
কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল বাতাসে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ । হাসপাতালগুলোতেও বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা । দিনের বেলা খানিকটা সময়ের জন্য ঝলমলে রোদের দেখা মিললেও বিকেল হতে না হতেই তা আবার মিলিয়ে যাচ্ছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে ।
সরেজমিনে শহর ও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে ভ্যান চালক, রিকশা চালক যারা রয়েছেন তাদের আয় ইনকাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। ঠান্ডার কারণে যাত্রী একবারে কমে গেছে । সকাল সকাল বাসা থেকে রিকশা ভ্যান নিয়ে বের হলেও ঠান্ডা কুয়াশার কারণে তারা ভাড়া মারতে পাড়ছেন না। একশ গজ দূরেও ঠিকভাবে দেখা যায় না। এতে করে দুর্ঘটনারও ঝুঁকি রয়েছে । বাজারে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে । কথা হয়, দিনমজুর শ্রেণির কিছু মানুষের সাথে তাদেরও আয় ইনকাম কমে গেছে।
প্রতিদিন শহরের প্রেসক্লাব মোড়, বাজারের বাখোপট্ট্রিসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল সকাল বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কিছু শ্রমিক। কাজ পেলেই তারা সেই কাজ করে থাকেন। নির্বাচন ও ঠান্ডায় কারণে তাদেরও কাজ কাম একবারে কমে গেছে। অনেকে কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া কৃষি শ্রমিক যারা রয়েছেন তাদেরও ভোগান্তির শেষ নেই। কারণ সকাল সকাল তাদের কাজে যোগ দিতে হয়। ঠান্ডার কারণে সঠিক সময়ে তারা কাজে যোগ দিতে পারছেন না। এজন্য তাদেরও কাজের সমস্য হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ উপজেলার শীতার্তদের মাঝে প্রায় ২৬ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্রের জন্য আরও চাহিদাপত্র অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিবার্তা/গোফরান/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]