দেশে উৎপাদন করা পেঁয়াজ ফুরিয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ে পেঁয়াজের। তাই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করতে হয় সরকারকে। তারপরও দাম থাকে আকাশছোঁয়া। তাই ভালো দাম পাওয়ার আশায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে চুয়াডাঙ্গার চাষীদের।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসুচির আওতায় পেঁয়াজ চাষে সফলতা এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে শীতকালীন পেঁয়াজ রোপণেও আগ্রহ বেড়েছে। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
ইতিমধ্যেই চাষিরা জমি থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করেছেন। আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। আবারও গ্রীষ্মকালীন জাতের ভারতীয় ও দেশীয় এ পেঁয়াজ চাষ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনে এক বিঘা জমিতে খরচের হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ৮০ মণ।বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ দাম নিচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। যেখানে খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি লাভ হয়েছে এবার ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া গ্রীষ্মকালীন দেশি জাতের পেয়াঁজ উৎপাদন করেও চাষীরা লাভবান হয়েছে। বাজারে দেশি জাতের পেঁয়াজের কদর অনেক বেশি তাই দামটাও যেন চড়া। চাহিদা বেড়েছে ইন্ডিয়ান ও দেশি জাতের পেঁয়াজের। অন্যবারের তুলনায় এবার কৃষকরা দেশি জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করেও লাভের মুখ দেখেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদরে এবার ৫০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ১৫৯ হেক্টর, দামুড়হুদায় ৪৭৩ হেক্টর ও জীবননগরে ৮০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৫৩৯ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ২৮ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ১৬০০ হেক্টর।
চুয়াডাঙ্গার পেঁয়াজ চাষী আল-আমিন বলেন, এবার দেশি জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করে লাভবান হয়েছি। এই জাতের পেঁয়াজে অনেক খরচ। কিন্তু লাভ এবার ঠিক পেয়েছি। বাজারে দেশি জাতের পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে।
বিল্লাল মিয়া নামের আরেক পেঁয়াজ চাষী বলেন, এক বিঘা জমিতে ইন্ডিয়ান জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করে বাম্পার ফলন হয়েছে। একদিকে খরচ কম আবার লাভ বেশি। বাজারে এই পেয়াঁজে চাহিদা ব্যাপক। তাই এই পেঁয়াজ উৎপাদন করে দামে অনেকটা খুশি।
জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, এই জেলার চাষীরা পেঁয়াজ আবাদে লাভবান হয়েছে। এবার বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পেঁয়াজের দাম পাওয়াতে খুশি কৃষক। পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ইতোমধ্যে জেলার দুই হাজার ১০০ চাষীকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানো এবং আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে।
বিবার্তা/সাঈদ/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]