দুর্গাপূজা
লামায় ৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা পুলিশের
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১৪:৪৮
লামায় ৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা পুলিশের
লামা প্রতিনিথি
প্রিন্ট অ-অ+

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আজ শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মহা ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন ও দেবীর মুখোন্মোচনের মধ্যে দিয়ে শুরু এ পূজা।


ইতোমধ্যে মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি কাজ শেষে আজ সন্ধ্যার আগেই শেষ হবে প্যান্ডেল তৈরি, প্রতিমা সাজ সজ্জা ও আলোকসজ্জার কাজ।


প্রতি বছরের মত এ বছরও বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের ৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। এসব পূজা মণ্ডপে কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় সজ্জিত হয়েছে দেবীদুর্গা সহ অন্যান্য দেবী-দেবতা। ২৪ অক্টোবর দশমী তিথিতে মাতামুহুরী নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব।


এবারের পূজার কেন্দ্রীয় হরি মন্দির মণ্ডপে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত ‘আরতি প্রতিযোগিতা ও নাটিকা প্রদর্শন’।


পূজায় দেবী দুর্গাকে বরণ করতে উদগ্রীব ভক্তরা। তাদের আয়োজনও কম নয়। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের আনন্দ আরো বেশি। নতুন জামা-কাপড় কিনতে কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীড় জমাচ্ছে হিন্দু ধর্মালম্বী নারী-পুরুষেরা।


পূজায় সার্বিক সহযোগিতা করছে উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালে উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দির মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটে।


এছাড়া এবার ভোটের আগে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় দুর্গা পূজার আয়োজন নির্বিগ্নে করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্ছ নিরাপত্তা-ব্যবস্থা।


এদিকে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিক ও খাদ্যশস্যও বরাদ্দ দেওয়া হয়।


পূজাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা কে পৃষ্টপোষক পূজা উদযাপন কমিটিও করা হয়।


কেন্দ্রীয় হরি মন্দির কমিটিতে বাবুল দাশ সভাপতি, রতন দত্ত সহ সভাপতি, বিজয় আইচ সাধারণ সম্পাদক ও গোপন চৌধুরী অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ কমিটি অনুষ্ঠিতব্য সবকটি পূজা মণ্ডপ পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করছেন।


ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেন এ কমিটির নেতারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম মহাষষ্ঠী ও প্রতিমা প্রদর্শনীর শুভ উদ্ভোধন করবেন।


এছাড়া দুর্গাপূজাকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপেও গঠন করা হয়েছে উদযাপন কমিটি। পূজার আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পূজারি থেকে শুরু করে কর্মব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরাও।


পূজার সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে লামা কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড ও সনাতনী যুব সমাজ।


পৌরসভা ও উপজেলার কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা হয় দেবীদূর্গা সহ অন্যান্য দেবী-দেবতা। সেই দেবী দেবতার মূর্তিতে রং তুলির কাজ শেষ। প্রতিমা সাজ সজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।


এ সময় প্রতিমা তৈরির শিল্পী বাবুল ভট্টাচার্য্য জানায়, প্রতিমা গড়া ও রং তুলির কাজ শেষ।


এ বিষয়ে লামা কেন্দ্রীয় দুর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় আইচ ও অর্থ সম্পাদক গোপন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছরের ন্যয় এবছরও পূজার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা পেয়েছি।


একই কথা জানালেন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের গুলিস্তান বাজার, ইয়াংছা, পাগলির আগা, কমিউনিটি সেন্টার, আজিজনগর ইউনিয়নের তেলুনিয়া, মেরাখোলা ও পৌরসভার চম্পাতলী মণ্ডপ কমিটির সদস্যরা।


কেন্দ্রীয় হরি মন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল দাশ জানায়, এবারও লামা পৌরসভা এলাকায় দুইটি, লামা সদর ইউনিয়নে একটি, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে চারটি, আজিজনগর ইউনিয়নে একটিসহ মোট ৮টি মণ্ডপে পূজা হবে।


লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম শেখ জানান, ২০২১ সালে মণ্ডপে হামলার ঘটনা মাথায় রেখেই এবারে পূজা উপলক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। মণ্ডপে পোষাকধারী ও সাদা পোষাকের পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করবেন। এছাড়া প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ গুলোর সাথে নিয়মিত আলোচনা চলছে। আশা রাখছি প্রতি বছরের মত এবারও সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে এই ধর্মীয় উৎসব সম্পন্ন হবে।


অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার জন্য উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল।


তিনি বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি মণ্ডপে বরাদ্দের পাশাপাশি সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।


বিবার্তা/আরমান/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com