লক্ষ্মীপুরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানায় পুলিশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮/০৭/২০২৩ খ্রি. তারিখ বিকাল অনুমান ৪.০৫ ঘটিকার সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আহ্বায়ক লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি এর নেতৃত্বে লক্ষ্মীপুর শহরন্থ গোডাউন রোড হতে একটি পদযাত্রা বের হয়ে দক্ষিণ তেমুহনী হয়ে আধুনিক (প্রা.) হাসপাতালের সামনে এসে বিকাল অনুমান ৪.৩০ ঘটিকার সময় পুলিশের বেরিকেড ভেঙ্গে লাঠি সোটা, ইট পাটকেল ও ককটেল বোমাসহ অতর্কিতভাবে পুলিশের উপর বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা আক্রমণ করে। কর্তব্যরত পুলিশ জনগণের জানমাল ও সরকারি মালামাল রক্ষার্থে তাৎক্ষনিক গ্যাস-গান ও শর্টগানের রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। তারা আধুনিক (প্রা.) হাসপাতালের সামনে বাহিরে রাখা মোটরসাইকেল ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও আশেপাশের দোকানপাট ভাংচুর করে। তাৎক্ষনিক পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে থানা পুলিশকে ছুড়িকাঘাতে একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে আছে মর্মে জনৈক ব্যক্তি জানান। পুলিশ কল রেসপন্স করলেও বিএনপির সাথে সংঘর্ষ চলাকালীন সে মুহূর্তে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে যাবার মতো কোন পরিস্থিতি ছিলো না, তাই পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসা অবধি পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয়। আহত ব্যক্তিটি জনৈক নোমানের বাসার সামনে বারান্দায় পড়েছিলেন। নোমান বাসার দরজা খুলে তাকে দেখতে পেয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে বিলম্ব হওয়ায় নোমান ইতোমধ্যে তার পরিচিত ৩/৪টি এম্বুলেন্সের মালিককে কল করলেও, উত্তপ্ত এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও রাস্তা অবরুদ্ধ থাকার কারণে তারাও আসতে অপরাগতা প্রকাশ করে। উচ্ছৃঙ্খল বিএনপি নেতা কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ দ্রুত সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে।
এতে আরো বলা হয়, বিএনপির সাথে পুলিশের যে স্থানে সংঘর্ষ হয়, সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডের স্থানের দূরত্ব আনুমানিক ২/২.৫ কি.মি.। বিএনপির পদযাত্রার রুটের সম্পূর্ণ বিপরীতে মূল সড়ক হতে দেড়শ গজ দূরে কলেজ রোডের পাশে ফিরোজা টাওয়ারের গলির মুখে ৪/৫ জন ছেলে সজীবকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে সজীব নিজেকে বাঁচাতে দৌঁড়ে ফিরোজা টাওয়ারের এসএস গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দোতলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠে ফ্লাটবাসার নোমান হোসেনের পাশের ফ্লাটের দরজার সামনে বসে শুয়ে পড়ে। নোমান মুমূর্ষু অবস্থায় সজীবের নাম ঠিকানা জিজ্ঞেসসহ আজকের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে এসেছে জিজ্ঞেস করলে, সজীব জানায় সে কোন প্রোগ্রামে আসেনি। সজীবকে এভাবে আঘাত করার কারণ হিসেবে জানায়, পাওনা টাকা এবং বিবাহ সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তারা হামলা করেছে। ঘটনাটির প্রকৃত সত্য উদঘাটনে রাত্রী দেড় ঘটিকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায় সজীব এর মৃত্যু এবং ভাড়াটিয়া মো. নোমান হোসেনের সাথে সজীবের শেষ মুহূর্তে কিছু কথা হয়, যা অনুসন্ধানে পাওয়া যায়।
লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ জানায়, প্রাথমিক সরেজমিন অনুসন্ধানে অত্র হত্যাকাণ্ডের সাথে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচির কোনই সত্যতা নেই। ইহা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। বিএনপি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চালায়। ইতোপূর্বে ভিন্ন একটি ছবি নিয়ে লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে গুজব ছড়ায় । যার সত্যতা আদৌ পাওয়া যায়নি।
বিবার্তা/রাসেল/রোমেল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]