টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলাটি যেন নিচু এলাকা। বর্ষায় নৌকা ছাড়া যেন এদের চলাচলের উপায় নেই। এ মৌসুমে ব্যস্ত থাকে ওই উপজেলার নৌকার কারিগররা। ধম ফালানোর সময় যেন পান না তারা। এমনি এক নৌকার কারিগরকে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। তিনি বলেন ছোট সময় থেকেই বাপ-দাদার কাছে তার হাতেখড়ি। কাঠ মিস্ত্রির কাজ করা তাদের নেশা ও পেশা। ওই কাঠমিস্ত্রির নাম প্রফুল্ল সুত্রধার(৬৫)। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের মৃত নেপালের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের রাশড়া করিম বাজারে কাজ শুরু করছেন। নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রফুল্ল সূত্রধরের সাথে আরও দুইজন কাজ করছেন তারাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। একটি নৌকা তৈরিতে তিনজনের দুই-তিনদিন সময় লাগে। কেউ কাঠ কাটতেছে আর কেউ লোহা লাগাচ্ছেন। বর্ষার সময় হলে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
কাঠমিস্তি প্রফুল্ল সূত্রধর বলেন, ৫৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাঠ মিস্তির কাজ করি। ছোট সময় থেকেই হাতুড়ি ও বাটালের সাথে বন্ধুত্ব হয়। আমাদের সময় তেমন কেউ পড়াশোনা করতো না। বাপ-দাদারা বলছে কাঠমিস্তির কাজ করেই পেট চালাতে হবে। তাই বাপ-দাদার সাথে কাজ শিখেছি। বাপ-দাদার সাথে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতাম। বর্ষার সময় হলে নৌকা তৈরি করি আর শুকনো মৌসুমে ঘর, খাট, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি তৈরি করি। এই এলাকায় বর্ষার সময়ে নৌকার কদর থাকে। বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। বাপ-দাদারা শিখিয়ে যাওয়া কাজ এখন আমাদের নেশা ও পেশা হয়ে গেছে। প্রতিদিন ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা মজুরি পাই। ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় নৌকা বিক্রি করা যায়।
কাঠ মিস্ত্রি রমেন বলেন, ছোট সময় থেকেই হাতুড়ি বাটলের সাথে বন্ধুত্ব করে আমাদের জীবন সংসার চলে। লেখাপড়া করি নাই। বাপ-দাদার পেশাকেই মূল পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। বউ পোলাপান নিয়ে মোটামুটি ভালোই চলতে পারি। প্রতিদিনের মজুরি পায় ৭০০-১০০০ টাকা। বর্ষার সময় নৌকা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এই পেশায় ৩০-৩৫ বছর ধরে আছি।
আরেক কাঠ মিস্ত্রি সখি সরকার বলেন, বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কাঠ চলবেই মিস্ত্রিরা । বর্ষার সময় নৌকার খুবই কদর থাকে। কাঠমিস্ত্রি কাজে আছি প্রায় ৩০ বছর ধরে। বাপ-দাদার পেশায় আমাদের পেট চলে। বর্ষার সময় নৌকার কাজ বেশি করি। নৌকা তৈরিতে লোহা, কাঠ, স্টিলের প্রয়োজন হয়। আর অন্য মৌসুমে ঘরের কাজ করি।
বিবার্তা/ইমরুল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]