হাতিয়ায় এসপি ও ওসি অবরুদ্ধ
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩, ০০:০৮
হাতিয়ায় এসপি ও ওসি অবরুদ্ধ
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরনি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড টাংকিরঘাট এলাকায় উত্তেজিত জনতা অবরুদ্ধ করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ওসি আলমগীর হোসেনকে। পুলিশ কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ রেখে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় লোকজন।


বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পের গোল ঘরে রাত ১০টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পরে নোয়াখালী সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।


নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ এণ্ড অপস) বিজয়া সেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাতে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে টাংকিরঘাট গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করি। পরে লক্ষ্মীপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে আছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ওসি আলমগীর হোসেন টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন। পরে তারা ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ক্যাম্পের গোল ঘরে বসেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই গোল ঘরে আসেন স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবুল হোসেন সুজন ও টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখওয়াত হোসেন।


পরে পুলিশ গোল ঘর থেকে তাদের বের করে দিলে বিষয়টি বাজারে উপস্থিত লোকজনের নজরে আসে এবং তারা উত্তেজিত হয়ে ক্যাম্প ঘেরাও করে। কিছু সময়ের মধ্যে স্থানীয় কয়েক হাজার লোকজন একত্রিত হয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে।


হরনি ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবুল হোসেন সুজন বলেন, বিকেলে টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন রামগতি সার্কেল ও রামগতি থানার ওসি। উনাদের দেখে আমি, ৪নং ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন মেম্বার, ৫নং ওয়ার্ডের মাইন উদ্দিন মেম্বার ও সাখাওয়াত মাস্টার ক্যাম্পের গোল ঘরে যায়। এসময় আমাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় আমাদের গালমন্দ করে বের হয়ে যেতে বলেন সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী। একপর্যায়ে তিনি আমাদের দিকে তেড়ে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ওই কক্ষ থেকে বের করে দেন।


তিনি আরও বলেন, উনারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রামগতি থেকে হাতিয়ায় এসেছেন। এর আগেও একাধিকবার রামগতির পুলিশ ও লোকজন বিভিন্ন সময় আমাদের সীমানায় এসে আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। আমাদের লাঞ্চিত করা ও তাদের কর্তৃক হয়রানি থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পেতে লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছে।


টাংকির ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখওয়াত বলেন, মেম্বাররাসহ আমি ক্যাম্পের গোল ঘরে গেলে সার্কেল সাহেব মেম্বাদের ওপর উত্তেজিত হয়ে সবাইকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আমরা দ্রুত ওই স্থান থেকে বের হয়ে চলে আসি।


রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় আমাদের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আমাদের অধীনে থাকা টাংকির ঘাট ক্যাম্পে আসি। ক্যাম্পে আমাদের মিটিং চলাকালে স্থানীয় মেম্বাররা আসলে আমরা উনাদের পরে আসতে বলি। কিন্তু উনারা বাইরে গিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উত্তেজিত করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে।


রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী মেম্বারদের সাথে খারাপ আচারণ ও ধাক্কা দেয়ার বিষয়টি সত্য না উল্লেখ করে বলেন, টাংকির বাজার ক্যাম্পের পাশে নোয়াখালী অঞ্চলে আরও একটি আরআরএফ (রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স) ক্যাম্প রয়েছে। আমরা ক্যাম্পের গোল ঘরে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সদের নিয়ে মিটিং এ বসার কিছুক্ষণ পর কোনো কিছু না বলে একজন লোক বসে পড়েন। আমি উনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মাইন উদ্দিন মেম্বার বলে পরিচয় দেন। আমি উনি এবং সাথে থাকা উনার লোকদের পরে আসার জন্য বলি। এরপর তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। নোয়াখালী থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আসছেন, উনারা আসার পর বিষয়টি নিয়ে কথা হবে।


বিবার্তা/এসএ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com