
পয়েন্ট নিমো পৃথিবীর সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন স্থান। এর সবচেয়ে কাছের স্থলভাগের মধ্যে রয়েছে—দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে ডুকি দ্বীপপুঞ্জ। পয়েন্ট নিমো থেকে এর দূরত্ব ২ হাজার ৭০০ কিলোমিটার।
এই পয়েন্ট নিমোকে বলা হয় স্যাটেলাইটের কবরস্থান। ১৯৭১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এখানে মোট ২৬৩টি মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ ফেলা হয়। এমনকি, ২০৩০ সাল নাগাদ এখনকার আন্তর্জাতিক মাহাকাশ স্টেশন বা আইএসএসের মেয়াদ শেষ হলে, ফেলা হবে এই পয়েন্ট নিমোয়।
পয়েন্ট নিমোতে কোনো জলজ উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর অস্থিত্ব নেই। সেখানকার ১,৬০১ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে শুধু মহাকাশযানের অবশিষ্টাংশ। এ ছাড়াও রয়েছে তেজস্ক্রিয় উপাদান এবং হাইড্রোজেনের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পানিতে এই পদার্থ থাকায় এখানে নেই কোনো সামুদ্রিক প্রাণী।
১৯৯৭ সালে আমেরিকার গবেষকরা পয়েন্ট নিমোর কাছে একটি নিম্ন কম্পাঙ্কের উপস্থিতি টের পান। সেই কম্পাঙ্কের ফলে এক ধরনের শব্দও শোনা যেত। প্রথম দিকে এর কোনো উৎস খুঁজে পাননি গবেষকরা।
কিন্তু পরে বিজ্ঞানীরা জানান, হিমবাহের চলনের ফলে এই শব্দের সৃষ্টি। মহাকাশযানের অবশিষ্টাংশ থেকে যে ক্ষতিকর রাসায়নিক নিঃসৃত হয়, তার জন্যও এখানে কোনো প্রাণী থাকতে পারে না।
কেউ কেউ মনে করেন, সমুদ্রের জলে তীব্র বিপরীতমুখী স্রোত তৈরি হওয়ার ফলে সেখানে পৌঁছতে পারে না কোনো পুষ্টিকর উপাদান। ওই এলাকার সমুদ্রের পানিতে খাবার পাওয়া যায় না বলেই নেই কোনো প্রাণীও।
ফরাসি ঔপন্যাসিক জুলে ভার্নের বিখ্যাত চরিত্র ক্যাপ্টেন নিমো। তার নামের ওপর ভিত্তি করেই এখানকার নাম দেওয়া হয়। লাটিন ভাষায় ‘নিমো’ শব্দের অর্থ ‘কেউ নয়’।
পয়েন্ট নিমো জায়গাটিতে প্রাণের কোনো অস্তিত্ব নেই বলেই এমন নামকরণ। যদিও সামুদ্রিক প্রাণীর কোনো অস্তিত্ব নেই, তবে পয়েন্ট নিমোর সমুদ্রপাতে আগ্নেয়গিরির ফলে যে ফাটল তৈরি হয়, সেখানে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]