ডিমলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৩, ২৩:১০
ডিমলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে এখন ধানি হলুদের সমারোহ। যতদূর চোখ যায় সবুজে ঢাকা মাঠগুলো অপরূপ সুন্দরে দিন দিন হলুদে ছেঁয়ে যাচ্ছে। আর এই সমারোহ দেখে রঙ্গিন হয়ে উঠেছ প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। এ যেন রঙ্গিন স্বপ্নের ছড়াছড়ি। প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে মাঠে থাকা ধানের চেহারা। নতুন পাকা ধানের আগমনী বার্তা কৃষকের পরিবারে এনেছে আনন্দের ঢেউ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। এখন গোটা উপজেলা জুড়ে মাঠে মাঠে পূবালী বাতাসে সোনালী ধানের শীষ হাওয়ায় দুলছে। এই ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠছে কৃষকেরা। বিগত বছরে দাম ভাল পাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান নিয়ে উল্লাস শুরু হয়েছে।


উপজেলার চরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে হিমেল হাওয়ায় দোল খাচ্ছে হাজারো কৃষকের স্বপ্নের ধান। প্রতিটি শীষে যেন কৃষকের জীবনের স্বপ্ন ভবিষ্যৎ জড়ানো। মাঠে মাঠে রোপণকৃত বোরো ধান কেউ কেউ কাটতে শুরু করলেও কয়েকদিনের মধ্যে ব্যাপকভাবে কাটা মাড়াই শুরু হবে। অনেক স্থানে যন্ত্র দিয়ে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কাজ।


ডিমলা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের আফজাল আলী বিবার্তাকে বলেন, দুই ছেলেকে ৫ বিঘা আবাদ করতে দিয়ে আমি নিজেই ৯ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। ধানের বীজ ক্রয় থেকে শুরু করে ঘরে তুলতে বিঘা প্রতি খরচ হবে প্রায় ১২ হাজার টাকা। তবে গতবার ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দেয়ায় ফলন কম হলেও এবার বিঘা প্রতি ১৮ মণ ফলনের আশা করছি। পুরোপুরি ধান কাটা শুরু করতে আরো ৭/৮ দিন সময় লাগবে। কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছি।


বালাপাড়া ইউনিয়নের চাষি হজরত আলী বিবার্তাকে বলেন, গত মৌসুমে বোরো রোপণ করে ধানের ভালো ফলন পেয়েছিলাম। সেই সাথে বাজার দর ভালো থাকায় মোটামুটি লাভের মুখ দেখেছিলাম। এবারও লাভজনক হতে পারে।


চর খড়িবাড়ী এলাকার কৃষক গোলাম রব্বানী বিবার্তাকে বলেন, গত বছর বোরো চাষ করে দাম ভালো পেয়েছিলাম। এবারও সেই আশায় ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান করেছি। ইতোমধ্যে ধানে পাক ধরেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু করতে হবে। তবে এ সময়টা শ্রমিক সংকট দেখা না দিলেই সঠিক সময়ে ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারব।


টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক হুমুজ আলী বিবার্তাকে বলেন, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। জমি চাষাবাদ খরচ ও সারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় এবছর মাত্র ৪ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। ফলন ভালো হবার সম্ভাবনা রয়েছে।


উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১১ হাজার ২শত ৫৪ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১১ হাজার ২শত ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বিবার্তাকে বলেন, এ বছরে ধানের আবহাওয়া ভালো। তাপে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে কিছু কৃষক ধান কাটতে শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বোরোধান কাটা হবে। এতে শ্রমিক সংকট অনেকটা কমে আসবে। তা ছাড়া যেসব ক্ষেতে ধান নুয়ে পড়েছে সেসব ক্ষেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।


বিবার্তা/সুজন/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com