মেঘনা নদীতে ফের বালু উত্তোলনের সীমানা নির্ধারণ
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৫৪
মেঘনা নদীতে ফের বালু উত্তোলনের সীমানা নির্ধারণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চার গ্রামের ভাঙন ঠেকাতে ড্রেজারে বালু উত্তোলনে মেঘনা নদীতে ফের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।


মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নে দিনব্যাপী এই কার্যক্রম চালায় উপজেলা প্রশাসন।


এসময় উপস্থিত ছিলেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান, এসিল্যান্ড মাহমুদা বেগম, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় ভূমি অফিসের নায়েব ও সার্ভেয়ারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।


নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেঘনা নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসন ইজারা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে নদীর তীর ঘেঁষে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কারণে গ্রামে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ইজারাদারদের ড্রেজারে বালু উত্তোলনের জন্যে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তারা ২০ একরের মধ্যে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করতে পারবে। এর বাইরে বালু উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগেও আমরা তাদের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম।


তিনি আরও বলেন, আগেও গ্রাম রক্ষায় নদীভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। ভাঙন দেখা দেওয়ায় আমরা স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। নদীভাঙন রক্ষায় কাজ চলমান প্রক্রিয়া।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও কেদারখোলা বালু মহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। বালু মহালের ইজারা পেয়েছে মেসার্স মৌসুমি ড্রেজিং সার্ভিস। যার স্বত্বাধিকারী পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন মিন্টু।


সম্প্রতি ইজারায় উল্লিখিত এলাকা থেকে তারা বালু উত্তোলন না করে খরচ কমাতে ও বেশি বালু তোলার লোভে নদীর চর ঘেঁসে বালু উত্তোলন শুরু করে। এমনকি সুযোগ বুঝে ড্রেজার লাগিয়ে তারা মেঘনা চরের ফসলি জমির মাটি কেটে নিতে থাকে। প্রতিদিন একেকটি ড্রেজার নদী থেকে ৫০ হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে। ফলে চারটি গ্রামের নদী তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে।


জোছনা বেগম নামে এক নারী বলেন, মেঘনা নদী আমার সব নিয়ে গেছে। আমার বাড়ির পাশেই নদীতে ড্রেজার বসিয়ে ইচ্ছেমতো বালু উত্তোলন করেছে। আমার ঘরের দরজার কাছাকাছি নদীর তীরের একেবারে কাছে অনেক ড্রেজার এক সঙ্গে বসিয়েছে। নদী ভাঙনে আমাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই। আমরা গরীব মানুষ, আমাদের তো টাকা পয়সা নেই যে জায়গা কিনে ঘরবাড়ি করতে পারব। রোহিঙ্গার মতো দেশে দেশে আমাদের ঘুরতে হবে। সরকারের কাছে আবেদন এসব ড্রেজার বন্ধ করা হোক।


মেঘনা নদী থেকে ড্রেজারে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে তীর ভাঙনে প্রায় শতাধিক পরিবার বসতভিটা ছাড়া হয়েছে। এতে হুমকিতে পড়েছে জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কেদারখোলা, ছয়ঘরহাটি, গাছতলা ও হরিপুরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার মোশারফ হোসেন মিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই ড্রেজিং করছি। সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ড্রেজিং করছি। কারো ক্ষতি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।


বিবার্তা/নিয়ামুল/বর্ষা/জামাল

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com