খেজুর রসের মিষ্টি গন্ধে মেতেছেন হাতিয়ার গাছিরা
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৩
খেজুর রসের মিষ্টি গন্ধে মেতেছেন হাতিয়ার গাছিরা
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শীতের সকাল সবুজের ডগায় শুভ্র শিশির আর কুয়াশার জড়িয়ে আছে নোয়াখালীর একমাত্র বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জনপদ। একটানা সুর করে গান গায় পাখি। এলোমেলো রাস্তা আর ঘনকুয়াশা মাঝে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে মাইলের পর মাইল খেজুর গাছ ।


হাতিয়া দক্ষিণ অঞ্চলে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে নিঝুম দ্বীপের গাছিরা। রসের মোহনীয় গন্ধে ভরে গেছে চারপাশ। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে রয়েছে খেজুর রস ও গুড়ের কদর। কেউ গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, কেউবা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে তাজা রসের স্বাদ গ্রহণ করেছেন। আগুনে রস জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বাটালি ও লালি গুড়। রস তৈরির মিষ্টি গন্ধেই মোচড় দিয়ে ওঠে ভোজনরসিক উদর।


অনেকে কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করতে আসে হাতিয়ার বিভিন্ন বাজারে। কেউ রস দিয়ে গুড় তৈরি করেন। শীতের সকালে অনেকেই এখানে খেজুরের রস কিনতে আসেন।


শীত এগিয়ে আসছে। অযত্ন ও অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুর গাছের কদরও বাড়ে শীত এলেই। খেজুর গাছ সুমিষ্ট রস দেয়। রস থেকে তৈরি হয় গুড় ও পাটালি। যার সাদ ও ঘ্রাণ আলাদা। পুরো শীত মৌসুমে চলে পিঠা-পুলি আর পায়েস খাওয়ার পালা।


হাতিয়া ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেজুর গাছ নিঝুম দ্বীপ ও জাহাজ মারা ইউনিয়ন, উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে হাতিয়াতে প্রায় ৩০ হেক্টর জমি রয়েছে, এক হেক্টর জমিতে খেজুর গাছ হয় ১০৯৯ টি, ১টি গাছেবছরে ১৬ কেজি করে এই উপজেলা করে প্রায় ৫১০ টন গুড় উৎপাদন হয়।


নিঝুম দ্বীপের স্থানীয় গাছি খেজুরের রস সংগ্রহকারী খোকন মিয়া বলেন, আমি এবার ১০০ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। প্রথম দিকে রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রসের পরিমাণ বেড়েছে। খেজুরের রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল দিই। জ্বাল দিয়ে তারপর গুড় বানাই। প্রতিদিন ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করি। প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা করে। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি।


স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ মিয়া বললেন, খেজুরের রস আমার কাছে খুবই পছন্দের। খেতেও দারুণ। সব বয়সি মানুষ খেজুরের রস ও গুড় পছন্দ করে। আমার বাড়ির পাশে থাকায় সকালে ঘুম থেকে উঠেই খেজুরের রস খেতে আসি। বাড়ির জন্য কিনেও নিয়ে যাই।


খেজুর গাছ ফসলের কোন ক্ষতি করে না। এ গাছের জন্য বাড়তি কোন খরচ করতে হয় না। ঝোপ-জঙ্গলে কোনোযত্ন ছাড়াই বড় গয়ে ওঠে। শুধুমাত্র মৌসুম এলেই নিয়মিত গাছ পরিষ্কার করে রস সংগ্রহ করা হয়। রস, গুড়, পাটালি ছাড়াও খেজুর গাছের পাতা দিয়ে মাদুর তৈরি ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়।


পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ বৃদ্ধি করা হলে দেশের গুড় পাটালির চাহিদা মেটানোর পর বিদেশেও রপ্তানি করা হলে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে।


বিবার্তা/সবুজ/এমএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com