প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে বাংলাদেশে একের পর এক গুজব রটছে। কোথাও থানকুনি পাতা খাওয়া হচ্ছে, কোথাও বা আবার তুলসি পাতা, আবার কালিজিরা বাটা খাওয়া হচ্ছে।
এবার নতুন করে করোনাভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে মাথা ন্যাড়া করা শুরু করেছেন অনেকেই। টাঙ্গাইলের সখীপুরে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এমন একটি গুজবকে গ্রহণ করেছে স্থানীয়রা।
গত কয়েকদিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক। শত শত যুবক এরই মধ্যে মাথা ন্যাড়া করেছেন। সেই ন্যাড়া মাথার দলগত ছবি পোস্ট দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
করোনাভাইরাসের দুর্যোগে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সব বয়সের মানুষের মাঝে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক লক্ষ্য করা গেছে। করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে মাথা ন্যাড়া করার দৃশ্যে মানুষের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মাথা ন্যাড়া করার এই বিষয়টি হাস্যকর বলছেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে অবস্থান করতে বলা হয় বাসা-বাড়িতে। এই সুযোগে অনেককেই মাথা ন্যাড়া করতে দেখা গেছে। মাথার চুল ফেলে কেউ নীরবে বাসায় অবস্থান করছেন আবার অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন।
মাথা ন্যাড়া করা উপজেলার কচুয়া গ্রামের ইব্রাহিম শিকদার, নজরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন সবাইকে বাসা-বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। কতদিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তারা স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করে নিচ্ছেন। এছাড়াও এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে আমরা মাথা ন্যাড়া করেছি।
আবার অনেকেই বলেন, সরকারি নির্দেশনায় এখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সেলুনগুলোও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সেলুনে যেতে না পারায় মাথায় চুল বেড়ে যাচ্ছে। গরমের এই সময়ে চুল বেড়ে গিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে। তাই বাড়িতে বসেই মাথা ন্যাড়া করে ফেলছেন।
এ বিষয়ে নরসুন্দর কানাই লাল শীল বলেন, সরকারি নির্দেশে বাজারের সেলুন ঘরটি এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই সংসার চালাতে খুব হিমসিম খেতে হচ্ছে। বাড়ি গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে তাদের বাড়িতে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিয়ে আসছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে গণহারে ন্যাড়া করার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে মাথা ন্যাড়ার সঙ্গে করোনাভাইরাস ঠেকানোর এবং ন্যাড়া করলেই যে ভাইরাসে সংক্রমিত হবেনা এর সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোনো ভিত্তি নেই। বিষয়টি হাস্যকর। এসব গুজব এড়িয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে বলেন তিনি।
বিবার্তা/তোফাজ্জল/জাহিদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]