রান্না করার জায়গাটি যদি খোলামেলা ও সুন্দর হয়ে থাকে, রান্না করার আগ্রহ বেড়ে যায় অনেকটাই। হেঁশেলে ঢুকতে তখন ভালোই লাগবে। ছোট আয়তনের ফ্ল্যাটগুলোর রান্নাঘর ছোটই হয়ে থাকে। এরপর যতই সাবধানতা অবলম্বন করুন না কেন, তেল, তরকারির ঝোল, ভাতের মাড়, মসলাবাটা এটা-সেটা পড়বেই চুলার আশপাশে। রান্নার সময় ধোঁয়া বাতাসের জলীয় বাষ্পের সঙ্গে এক হয়ে একধরনের আঠালো ভাবও তৈরি করে ফেলে। এতে রান্নাঘরের দেয়াল ও অন্যান্য জিনিসপত্র তেল চিটচিটে হয়ে যায়। কিছু নিয়ম মেনে চললে তেল চিটচিটে ভাব দূর করে ঝকঝকে করে রাখা যায় আপনার হেঁশেলটা।
যতই কষে রাঁধবেন, রান্নাঘরে ততই কালিঝুলি মাখবে। কড়াইয়ে মাছ বা সবজি ছাড়লে তেল ছিটকে পড়বে। আবার মাংসে নুন হলুদ মাখাতে গিয়ে তার ছোঁয়া লাগতেই পারে। তা ছাড়া, রান্নার সময় ধোঁয়া উপরের দিকে ওঠে। এই ধোঁয়া রান্নাঘরের ক্যাবিনেট নোংরা, চিটচিটে করে বেশি। নিয়মিত পরিষ্কার না করলে এর সঙ্গে তেলের ছিটে, আগুনের তাপ মিশে আঠালো হয় ময়লা। তা শক্ত হয়ে জমে গেলে ওঠানো মুশকিল। তাই নিয়মিত সাফাই জরুরি। ক্যাবিনেট পরিষ্কার সব সময়ে উপর থেকে শুরু করবেন। কাজ সহজ হবে।
• দুর্গন্ধ ও পোকামাকড় এর উপদ্রপ কমাতে রান্নাঘরের বিভিন্ন কোনায় লেবুর টুকরো রাখতে পারেন। এতে দুর্গন্ধ আর পোকামাকড় দুই-ই কমবে।
• রান্না করার সময় চুলার ওপর চা,তরকারির ঝোল ছলকে পরে এবং শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। এক চামচ লবন আর গরম পানি দিয়ে ভাল করে ঘষে নিলে তা সহজেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
• কাঁচা মাছ বা মাংস রাখার পাত্রটিতে বাজে গন্ধ হয়ে যায়। চায়ের লিকারে পাত্রটি ডুবিয়ে রাখলে দুর্গন্ধ দূর হয়। একই ভাবে বটিও পরিষ্কার করতে পারেন।
• রোজকার তেলচিটচিটে দাগ নির্মূল করতে, এক কাপ হালকা গরম জলে পাঁচ চামচ ভিনিগার মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরুন। মিশ্রণটি এমন ভাবে ক্যাবিনেটে ছড়ান, পুরোপুরি না ভেজে। মিনিট দশ পর আবার স্প্রে করে, শুকনো নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিন। জেদি দাগে ওই জায়গাটুকু স্পঞ্জ স্ক্রাবার দিয়ে যত্ন করে সাফ করুন। ভিজে ভাব যেন না রয়ে যায়।
• ময়লার পরত জমলে, লিকুইড ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন। গরম জলে সেটি মিশিয়ে, কাপড় ভিজিয়ে ক্যাবিনেট পরিষ্কার করুন। পাঁচ মিনিট বিরতি দিয়ে আবার মুছে নিন।
• কঠিন তেলচিটে দাগের জন্য এক কাপ পানিতে চার ভাগ বেকিং সোডা ও এক ভাগ ভিনিগারের ঘন মিশ্রণ দিয়ে পরিষ্কার করুন। তবে সাবধানতার জন্য সামান্য মিশ্রণ নিয়ে ক্যাবিনেটের অল্প অংশ মুছে পরখ করে নিন, পালিশের ক্ষতি হচ্ছে কি না!
• ডিজাইন করা খাঁজের মধ্যে ময়লা আটকে গেলে টুথব্রাশ বেকিং পাউডারের সলিউশনে ডুবিয়ে পরিষ্কার করুন। আলাদা একটি টুথব্রাশে কাপড় জড়িয়ে ধুয়েমুছে পানি শুকিয়ে নিলেই ঝকঝকে থাকবে।
• রান্নাঘর খোলামেলা না হলে, অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে অনেক সময়ই ছত্রাক জন্মায় ক্যাবিনেটে। ছত্রাক ধ্বংস করতে চার কাপ ভিনিগার, দু’ টেবিল চামচ তরল সাবান, অল্প লবণ মিশিয়ে একটি বোতলে ভরে স্প্রে করুন। মিনিট দশেক পরে ভাল করে ঘষে মুছে শুকিয়ে ফেললে ক্যাবিনেট জীবাণুমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন থাকবে।
• ক্যাবিনেটের হাতলে চিটচিটে ছোপ পড়লে, এক কাপ গরম পানিতে দু’ চামচ ডিশওয়াশিং জেল ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ময়লা অংশে মিশ্রণটি দশ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। পরে পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে নিন।
• কাচের জার তেলচিটে হলে, ১৫ দিন অন্তর লেবু বা কমলাবেলুর খোসা বয়ামের উপর ঘষুন।
• রান্নার সময়ে পাশে পরিষ্কার কাপড় রাখুন। কিছু ছিটকে ক্যাবিনেটে লাগলে সঙ্গে সঙ্গে মুছে দিন।
• ক্যাবিনেটের পাল্লা খুলে রান্না করবেন না। রান্নার তাপ ও ঝুল থেকে ভিতরটা রেহাই পাবে। বারবার পাল্লা না খুলে দরকারি মশলাপাতি আগেই বার করে রাখুন।
• মাসে একদিন সমস্ত জিনিসপত্র বার করে ক্যাবিনেটের ভিতর-বাইরের ঝুল পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারের সময়ে মেঝেতে কাগজ বিছিয়ে নিলে, তেল কালির নোংরায় রান্নাঘরের মেঝে নষ্ট হবে না।
• তেলকালি সাফ করার পরে, নিজের হাত দু’টিও ধুয়ে মুছে ময়শ্চারাইজ়ার বা হ্যান্ড ক্রিম লাগান।
বিবার্তা/এসএ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]