ভবিষ্যতে ২৪ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৫ ঘণ্টায় হতে পারে দিন
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:৩৯
ভবিষ্যতে ২৪ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৫ ঘণ্টায় হতে পারে দিন
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

এক দিনে ২৪ ঘণ্টা। এই ২৪ ঘণ্টায় এক বার নিজের অক্ষের চারদিকে ঘোরে পৃথিবী। কিন্তু এক দিনে যদি ২৪ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৫ ঘণ্টা হয়? অর্থাৎ দিনের দৈর্ঘ্য যদি আরও একটু বেড়ে যায়? তাহলে কী হতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে এমনও হতে পারে। ২৫ ঘণ্টায় হতে পারে এক দিন, রয়েছে সেই সম্ভাবনা।


পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর দাঁড়িয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঘুরে যাকে বলে আহ্নিক গতি। এই আহ্নিক গতির জন্যই ভবিষ্যতে ২৪ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৫ ঘণ্টায় হতে পারে দিন।


পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর দাঁড়িয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে (ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে) ঘুরছে। একে বলে আহ্নিক গতি। এখন পৃথিবী প্রায় ২৪ ঘণ্টায় নিজের অক্ষের চারপাশে এক বার ঘুরছে। এই গতির কারণেই হয় দিন এবং রাত। পৃথিবীর সব অংশ সূর্যের আলো পায়। আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আহ্নিক গতির কারণে উত্তর গোলার্ধে বায়ু এবং জল একটু ডান দিকে বেঁকে যায়। এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। এ কারণেই আবহাওয়া এবং সমুদ্রস্রোতের পরিবর্তন হয়।


প্রায় ৪৬০ কোটি বছর আগে তৈরি হয়েছিল পৃথিবী। গ্যাস ও ধুলো থেকে ক্রমে আজ এই আকার নিয়েছে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে সেগুলো জমাট বাঁধতে শুরু করে। তখন থেকেই শুরু হয় আহ্নিক গতি। র্বিজ্ঞানীদের একটি দল বলছে, যে ভাবে পৃথিবী নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুরছে, তাতে দিনের সময়সীমা বৃদ্ধি পেতে পারে। ভবিষ্যতে আরও বেশি ক্ষণ পৃথিবীর সর্বত্র স্থায়ী হতে পারে দিন। অর্থাৎ এখন এক জায়গায় নির্দিষ্ট ঋতুতে যত ক্ষণ থাকে দিনের আলো, ভবিষ্যতে সেই সময়সীমা বৃদ্ধি পেতে পারে।


র্বিজ্ঞানীদের এ দলটি বহু বছর ধরে পৃথিবীর আহ্নিক গতির উপর নজর রাখছে। তারাই মনে করছে, ভবিষ্যতে আরও বেশি ঘণ্টা থাকতে পারে দিনের আলো। কোন পরিস্থিতিতে হতে পারে এ রকম? বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত কয়েক বছরে পৃথিবীর আহ্নিক গতির প্রকৃতি এবং গতিতে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।


বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করেন, জলবায়ু ও পরিবেশের পরিবর্তনের কারণেই পৃথিবীর আহ্নিক গতিতে বদল এসেছে। জার্মানির মিউনিখের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক মনে করেন, এ ভাবে আহ্নিক গতিতে বদল আসতে থাকলে দিনের দৈর্ঘ্যের হেরফের হতে পারে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী উলরিখ স্ক্রিবার জানিয়েছেন, বেশ কিছু ভৌগোলিক ও পরিবেশগত কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে আহ্নিক গতির প্রকৃতি। রিং লেসার প্রযুক্তির মাধ্যমে আহ্নিক গতির পরিবর্তন লক্ষ্য করছেন মিউনিখের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। মাটির ২০ ফুট গভীরে রাখা থাকে এই প্রযুক্তি।


বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই যে ২৫ ঘণ্টায় এক দিন হবে, এমন নয়। এ রকম হতে বহু বছর সময় লাগবে। তবে যখন হবে, তখন পৃথিবীর অনেকটা কাছে চলে আসবে চাঁদ।পৃথিবীতে স্থল এবং জলভাগের অবস্থান, মাত্রা, এ সবের উপর নির্ভর করে আহ্নিক গতি। এ সবের ওঠাপড়ার কারণে ধীরে ধীরে বদল হতে পারে আহ্নিক গতির। তবে তা খুব দ্রুত নয়। কয়েক কোটি বছর লাগতে পারে।


বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করেন, এক সময় ২৩ ঘণ্টায় পৃথিবীতে এক দিন হত। সে কোটি কোটি বছর আগের কথা। সে সময় পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াত ডায়নোসর। ১৪০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এক দিনের দৈর্ঘ্য ছিল ১৮ ঘণ্টা ৪১ মিনিট।


সেই হিসাব করে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ২০ কোটি বছর পর পৃথিবীতে ২৫ ঘণ্টায় হতে পারে এক দিন। ২৪ ঘণ্টা থেকে বৃদ্ধি পেতে পারে মেয়াদ। তার প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীর আবহাওয়া থেকে পরিবেশ, সকলের উপরেই।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com