শিরোনাম
বাংলাদেশের নার্সিং পেশার দুই মানবিক অভিভাবক
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২০, ১৬:২২
বাংলাদেশের নার্সিং পেশার দুই মানবিক অভিভাবক
ইসরাইল আলী সাদেক
প্রিন্ট অ-অ+

নার্স শব্দের অর্থ হচ্ছে সেবক বা সেবিকা। পেশাই বলে দেয় তার কাজ। হাসপাতাল, ক্লিনিকে মানুষকে পরম মমতায় যত্মআত্তি করে সুস্থ করে তুলেন নার্সরা। কিন্তু এই কয়েক বছর আগেও এই পেশার সাথে জড়িতরা ছিলেন অবহেলিত, নিগৃহিত। নার্সিং পেশাকেই অনেকে আড় চোখে দেখতেন। অবজ্ঞা করতেন। তবে সেই অবস্থা এখন আর নেই। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পেশাকে বদলে দিয়েছেন। নার্সিং পেশা এখন একটি মর্যাদাকর পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভ করেছে।


বর্তমানে বাংলাদেশের নার্সিং পেশাকে এগিয়ে নিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের যে কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন তার মধ্যে অন্যতম অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সিদ্দিকা আক্তার স্যার ও অধিদফতরের শিক্ষা ও প্রশাসন পরিচালক (উপ সচিব) মো. আবদুল হাই পিএএ স্যার অন্যতম। বাংলাদেশের নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের এই দুই কর্ণধার শুধু অধিদফতরের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাই নয়, ইতোমধ্যে নানা কাজকর্মের মাধ্যমে তারা নিজেদের সারাদেশের নার্সদের মানবিক অভিভাবকের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নার্সরা কেমন আছেন এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়গুলো ঠিকই নজরদারি করে থাকেন এ দুই অভিভাবক। কোথাও কোনো নার্সের সমস্যার খবর পেলে আন্তরিকতার সাথে তা সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। এতে নার্সদের কর্মোদ্যম বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেকটা নির্ভারভাবে তারা কাজ করতে পারছেন।


এই মানবিক অভিভাবকদের আন্তরিকতার দু’একটি উদাহরণ না দিলে কার্পণ্য হয়ে যাবে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নার্সিং কর্মকর্তা তার কর্মস্থল নিয়ে সমস্যায় পড়েন। বিষয়টি জানতে পারেন মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার স্যার। সাথে সাথে তাকে বদলি করে নিয়ে আসা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। নার্স মেয়েটি এতে কি পরিমাণ উপকৃত হয়েছে সেটা কেবল সে আর তার পরিবারই জানে।


মো. আবদুল হাই পিএএ স্যারের আরেকটি কাজের উদাহরণ দিয়ে লেখা শেষ করবো। গত ১৩ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে যোগদান করেন যশোরের এক সিনিয়র স্টাফ নার্স। প্রিয়াংকা দাম নামের ওই নার্সিং কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে সেখানকার এক ব্যক্তি তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করা শুরু করে। একপর্যায়ে লক্ষ্মীপুরে দায়িত্বপালন করা দু:সাধ্য হয়ে দাঁড়ায় প্রিয়াংকার। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা আর ছোট দুই বোনকে নিয়েও বাড়তে থাকে দুশ্চিন্তা। লক্ষ্মীপুর থেকে বদলি হয়ে সে অন্তত নড়াইল যেতে চাইছিল। এতে পরিবারের খোঁজ খবর রাখতে পারবে সে। কিন্তু চাকরিতে যোগদানের তিন মাসের মাথায় বদলির আবেদন করারও সাহস পাচ্ছিল না প্রিয়াংকা।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রিয়াংকার এই সমস্যার কথা জেনে আমি যোগাযোগ করি আবদুল হাই স্যারের সাথে। মেয়েটির সমস্যার কথা জানাই স্যারকে। বিশ্বাস ছিল আমাদের মানবিক স্যার নিরাশ করবেন না। সত্যি সত্যি স্যারকে জানানোর পরদিনই প্রিয়াংকার বদলির ব্যবস্থা হয়ে যায়। দু’একদিনের মধ্যে প্রিয়াংকা হয়তো তার কাঙ্খিত কর্মস্থলে যোগ দেবে। সকল ভীতি আর শঙ্কা কাটিয়ে নতুন কর্মস্থলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিজেকে সঁপে দেবে।


অধিদফতরে সিদ্দিকা আক্তার স্যার ও আবদুল হাই স্যারের মতো অভিভাবক থাকলে আসলে নার্সরা কখনো নিজেদেরকে অসহায় ভাববে না। বরং সকল ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে সেবার ব্রত নিয়ে তারা এগিয়ে যাবে।


লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ), সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা।


বিবার্তা/খলিল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com