শিরোনাম
‘একজন অদম্য রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং দৃশ্যমান অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:৫৯
‘একজন অদম্য রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং দৃশ্যমান অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’
ভূঁইয়া মোঃ ফয়েজউল্লাহ মানিক
প্রিন্ট অ-অ+

কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত তার রচিত মহাভারত- এর শুরুতেই একটি শ্লোক দিয়ে শুরু করেছিলেন -


‘নারায়নং নমস্কৃত্য নরৈঞ্চব নরোত্তমম। দেবীঙ সরস্বতীঞ্চইব ততো জয়মুদীরয়েৎ।’


অর্থাৎ, ‘নারায়ণ,নরোত্তম নর তথা বিষ্ণুর অংশস্বরূপ দেবতা ও দেবী সরস্বতীকে নমস্কার করে তারপর জয় উচ্চারণ করবে।’


প্রসঙ্গটির অবতারণার কারণই হলো আমার এই লেখাটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের সাথে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত। মহাভারত-এ যেমন উগ্রশ্রবা তথা সূতজাতির বৃত্তিসারথ্য ও পুরাণাদি কথন প্রসঙ্গে নারায়ণ, নরোত্তম নর আর দেবী সরস্বতীকে প্রণাম জানিয়ে বিজয়পদ আখ্যান পাঠের কথা বলা হয়েছে, তেমনি বিস্ময়কররকমভাবে পরিপূর্ন সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের পথে প্রত্যাশার থেকেও অধিক দ্রুততায় এগিয়ে যাওয়া আজকের বাংলাদেশ সম্পর্কে তথা বাংলাদেশের বিজয়োপাখ্যান উপস্থাপনের পূর্বে বিশ্ব নেতৃত্বকে তাক লাগিয়ে যিনি আপন আলোতে প্রিয় বাংলাদেশকে উদ্ভাসিত করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত, সেই রাষ্ট্রপ্রধান দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্তুতি পরিবেশনও অত্যাবশ্যক। কারণ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফিনিক্স পাখির মতো।


আজকের লেখায় মূল আলোচ্য বিষয় স্বপ্নের পদ্মাসেতু এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ---


সম্প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু স্থিরচিত্র এবং একটি ভিডিও যা তিনি নিজ হাতেই ধারন করেছেন, সেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে ফেরার পথে তিনি নিজ মোবাইল ফোনে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ধারন করছিলেন। ঠিক সেই সময়টিতে ফোকাস বাংলার ইয়াছিন কবির জয় ভাই কিছু স্থিরচিত্র ধারণ করেন তার ক্যামেরায়। স্থিরচিত্রগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বসিত মুখাবয়বই থেকেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, সবার স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজের এই দ্রুত অগ্রগতিতে তিনি কতটা আনন্দিত। তবে এই উচ্ছ্বাসটা আদতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। এটা বাংলাদেশের যে কেউই এখন নিসংকোচে বলতে পারেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের মতো এত বড় একটি প্রকল্পকে থমকে দিতে একটি চক্র শুরু থেকেই ভয়াবহ সব ষড়যন্ত্রের শরণাপন্ন হয়েছিল।তবে শেষ অবধি প্রধানমন্ত্রীর সাহসি সিদ্ধান্ত আর একরোখা অবস্থানের কাছে কুশীলবদের সব ষড়যন্ত্রই মুখ থুবড়ে পড়েছিল।


২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের চাপের মুখেই কোনো দালিলিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির বিদায়ী চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বিদায় সংবর্ধনায় এমনটাই জানিয়েছেন। মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগে আমরা (দুদক) যে এজাহারটি করেছি তাতে মামলা করার মতো কোনো উপাদান ছিল না। আসলে এটা ঠিক হয়নি।’


শুরু থেকেই এই অভিযোগ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক হিসেবেই এই মামলাটিকে উপস্থাপন করে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার।দেশি বিদেশি একটি চক্রের ষড়যন্ত্রমূলক সক্রিয় অবস্থানের কথাও বারংবার উল্লেখ করবার চেষ্টায় সরকার সরব থাকলে কিছু মানুষের অতিরঞ্জিত উপস্থাপন আর নির্দিষ্ট একটি প্রিন্ট মিডিয়ার অতি উৎসাহী ধারাবাহিক টার্গেটে সংবাদ উপস্থাপনে কম-বেশি পুরো দেশবাসীই বিভ্রান্ত হয়েছিল বৈকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন পদ্মা সেতু নিয়ে বক্তব্যে অনড় থাকলেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে। বিশ্বব্যাংকের এই মিথ্যা অপবাদের গ্লানিমুক্ত হতে আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীলতার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনন্য সাহসিকতা দেখিয়েছিলেন বৈকি। যেহেতু প্রথম থেকেই বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর চূড়ান্ত ঘোষণার এক দিন আগেই নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার। নিজস্ব অর্থায়নেই নির্মিত হতে থাকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।


পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত প্রমাণ পাননি কানাডার টরন্টোর এক আদালত। তাই কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে নির্দোষ রায় দিয়ে খালাস দিয়েছেন ওই আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭- শুক্রবার স্থানীয় সময়ে এই রায় দেয়া হয়।


এই রায়ের ফলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে যে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক, তা থেকে বাংলাদেশ দায়মুক্তি পেল। পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল বিশ্বব্যাংকের। কিন্তু দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ এনে ২০১২ সালে এ প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্বব্যাংক। অভিযোগ ছিল, কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনকে কাজ পাইয়ে দিতে দুর্নীতির চেষ্টা হচ্ছে। এতে সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা ও এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তারা জড়িত। ওই সময় রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে (আরসিএমপি) এই খবর জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্সি (আইএনটি) বিভাগ। এ নিয়ে কানাডার আদালতে মামলা হয়। শুক্রবার মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ভূঁইয়া।


রায় পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে কান্ট্রি ডিরেক্টরের একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতি অনুযায়ী বলা হয়েছে 'বিশ্বব্যাংক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকে। যখনই এসব বিষয়ে তদন্ত শেষ করে বিশ্বব্যাংক, তখনই তদন্তের তথ্য-উপাত্ত ওই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া হয়। ওই দেশের আইনের ব্যত্যয় হয়েছে কি না—এই স্বার্থেই বিশ্বব্যাংক তদন্তের তথ্য-উপাত্ত দেয়। তবে বিবৃতিতে শুক্রবারের রায় নিয়ে সরাসরি কিছু বলা হয়নি।'


কানাডায় দায়ের করা ওই মামলার প্রমাণ হিসেবে রয়্যাল কানাডীয় মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) অভিযুক্ত ব্যক্তিদের টেলিফোনে আড়ি পাতার রেকর্ড আদালতে জমা দিয়েছিল। কানাডার টরন্টো স্টার পত্রিকার গত শুক্রবারের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে, শুক্রবার কানাডার আদালত আদেশ দেয়ার সময় টেলিফোনে আড়ি পেতে পাওয়া যেসব প্রমাণ দাখিল করা হয়েছিল, সেগুলো নাকচ করে দেন আদালত। সেই সঙ্গে এভাবে প্রমাণ সংগ্রহ করে তদন্ত কার্যক্রমের সমালোচনা করা হয়। কানাডার সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক ইয়ান নর্দেইমার এ রায় দেন।


টরন্টো স্টার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী রায়ের আদেশে বিচারক লেখেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল, তা জল্পনা, গুজব আর জনশ্রুতি ছাড়া কিছুই না।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংক অভ্যন্তরীণ চারজন গোপন সংবাদদাতার খবরের ভিত্তিতে এই অভিযোগ এনেছে বলে আদালতে জমা দেয়া আবেদনে আরসিএমপি উল্লেখ করেছে। এই চারজনের মধ্যে মূলত আরসিএমপি একজনের বক্তব্যকেই আমলে নিয়েছে। বাকি তিনজনের সঙ্গে তারা কখনো কথাও বলেনি, এমনকি কোনো ধরনের তদন্তও করেনি। আর এই একজনের সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেছে। আদালতের ভাষ্য, উপস্থাপিত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, সব না হলেও অধিকাংশ তথ্যই ‘২ নম্বর তথ্যদাতা’র কাছ থেকে সংগৃহীত। কিন্তু পুলিশ কখনোই এই তথ্যদাতাদের সঙ্গে কথা বলেনি কিংবা তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর করেনি। আবার ২ নম্বর তথ্যদাতা আসলে এই প্রকল্পের একজন ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ। তিনি নিজেও পদ্মা সেতু প্রকল্পের উল্লিখিত কাজের দরপত্রে অংশ নিয়েছিলেন এবং কাজ পাওয়ার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিলেন।


টরন্টো স্টার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানাডার ওই আদালতের রায়ে আরসিএমপির তদন্ত কার্যক্রমে এভাবে আড়ি পেতে ব্যক্তিগত আলাপন রেকর্ডটি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করার সমালোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া আরসিএমপি কর্তৃপক্ষ আদালতে বলেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ পেতে কেভিন ওয়ালেসসহ তিনজন দুবাইয়ে বৈঠক করেছেন এবং তারা কানাডার পিয়ারসন বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। কিন্তু কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) বলেছে, ওই সময় কেভিন ওয়ালেস দুবাই যাননি।


প্রথম থেকেই বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর চূড়ান্ত ঘোষণার এক দিন আগেই নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সরকার। নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু হচ্ছে। ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পে এই পর্যন্ত ৪০ শতাংশের মতো বাস্তবায়িত হয়েছে।


ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশ হিসেবে আমাদের জন্য সুসংবাদ; সরকারের জন্য স্বস্তিদায়ক। এত দিন ধরে পদ্মা সেতু নিয়ে যে আলোচনা, তোলপাড়, বিতর্ক হয়েছে, এর অবসান হলো।’


টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরো বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিশ্বব্যাংক তদন্ত করল। বাংলাদেশে তদন্ত দল পাঠাল। সেই দলের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অভিযোগ অব্যাহত রাখল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণের আগেই পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে শাস্তি দিয়ে ফেলল বিশ্বব্যাংক। এখন আদালতে প্রমাণ হয়েছে, দুর্নীতি হয়নি। তাহলে সরকারের উচিত, এই বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কাছে জবাব চাওয়া।’


এই বিষয়ে জানতে ওই দৈনিকটির পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে কান্ট্রি ডিরেক্টরের একটি বিবৃতি পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকে। যখনই এসব বিষয়ে তদন্ত শেষ করে বিশ্বব্যাংক, তখনই তদন্তের তথ্য-উপাত্ত ওই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া হয়। ওই দেশের আইনের ব্যত্যয় হয়েছে কি না—এই স্বার্থেই বিশ্বব্যাংক তদন্তের তথ্য-উপাত্ত দেয়। তবে বিবৃতিতে শুক্রবারের রায় নিয়ে সরাসরি কিছু বলা হয়নি।


সুতরাং এটা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়েছে যে, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি’। একে একে মুখ খুলতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী-সহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব।


কয়েকজন নেতার প্রতিক্রিয়া রেফারেন্সসহ তুলে ধরছি---


★ একনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন – ‘এক ব্যক্তির কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্পে মিথ্যা অভিযোগ’(বাসস,১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)।


★ ‘পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র আজ সত্য প্রমাণিত: দীপু মনি’ (২০ ডিসেম্বর, ২০১৭- দৈনিক প্রথম আলো)।


★ ‘তাদের উচিত ক্ষমা চাওয়া: জয়’ [প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা] (১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭- দৈনিক প্রথম আলো)।


★ ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি। বিশ্বব্যাংকের সততা বিভাগ অপদার্থ : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত’ (৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩- দৈনিক প্রথম আলো)।


প্রতিক্রিয়ার রেফারেন্সগুলো প্রথম আলো পত্রিকারই দিলাম কারণ এই পত্রিকাটিই পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়টি নানানভাবেই বেশ ফলাও করে প্রচার করেছিল। যদিও রায় প্রকাশের পর বিভিন্নভাবেই নিজেদের আত্মপক্ষ সমর্থনে ইনিয়েবিনিয়ে তারা যে মানুষের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি আরো বেশি স্বচ্ছ হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিল, সেটাই বলার চেষ্টা করেছে।


আর যে ক'জন ব্যক্তির কথা নিবন্ধের শুরুতেই বলা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ডঃ মুহম্মদ ইউনুস, যিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছেই এটা প্রমাণ করতে সবসময় সরব ছিলেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার ব্যক্তিগত অবস্থানের প্রভাব দিয়ে সরকার তথা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেরই একটা ঋণাত্মক অবস্থান তৈরি করতে আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়েছিলেন। কিন্তু তার এই মিথ্যাচার শেষপর্যন্ত সত্যের উদ্ভাসিত আলোকচ্ছটায় মিলিয়ে গিয়ে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।


আর এই সবই সম্ভব হয়েছে আমাদের দৃঢ়চেতা-স্বাধীনচেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যৌক্তিক একরোখা অবস্থান আর দক্ষ-সাহসী পদক্ষেপের কারণে।


বেশ কয়েকবার পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ইতোমধ্যেই। নকশা পরিবর্তন, অবকাঠামো উন্নয়ন, ভূমির পরিমাণ ও পরামর্শকের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় আরো ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ালো ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এই বিরাট বাজেটের পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ স্ব-অর্থায়নে করার সাহস দেখাতে পারে সম্ভবত কেবল আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাই। সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বরাত দিয়ে ১৮ অক্টোবরের দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী বর্তমানে পদ্মা সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। সেতুর আর্থিক অগ্রগতি ৭৫.৮৪ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ। ২০২১ সালের জুন নাগাদ পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ।


শুরুতেই বলেছিলাম, 'তিনি ফিনিক্স পাখির মতো'। ষড়যন্ত্রকারী কুশীলবদের সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতাকে পায়ে ঠেলে তিনি এগিয়ে যান সম্মুখে প্রত্যাশিত লক্ষ্যে অদম্য গতিতে। তিনি প্রচণ্ডভাবে দৃঢ়চিত্তের মানুষ বলে, এসকল প্রতিবন্ধকতা ওনাকে মোটেও বিচলিত করে না। রাজনৈতিক পথচলার শুরু থেকেই তিনি নানান দেশীয়-আভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে আপামর বাংলাদেশিদের বস্তুনিষ্ঠ সব প্রয়োজনীয়তাকে পূরণ করতে আজকের দিনেও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি উন্নত-স্বাভলম্বী-আধুনিক তথা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে। সহস্র প্রতিকূলতাকে পায়ে ঠেলে এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের দীপ্ত শপথে এক অকুতোভয় ভীরের মতো লড়ে যাচ্ছেন তিনি।


দেশরত্ন শেখ হাসিনার দক্ষতা-বিচক্ষণতা- দৃঢ়তা কিংবা অসাধারণ সব গুণাবলি নিয়ে কথা বলবার যোগ্যতা নিশ্চিত করেই আমার মতো অতীব ক্ষুদ্র ছাত্রকর্মীর নেই।তিনি একাধারে একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী,দক্ষ-বিচক্ষণ রাষ্ট্র নায়ক, কৃষিবান্ধব প্রধানমন্ত্রী,শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী, শ্রমিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী,ব্যবসাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী,শিল্পবান্ধব প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসেবায় সর্বাত্মক উদার, আবার রাজনৈতিক নেতা হিসেবে সর্বোচ্চ কর্মীবান্ধব উদার নেতা । এত সব অসাধারণ গুণে গুণান্বিত বর্তমান বিশ্বে অন্য আরেকজন রাষ্ট্র প্রধান সম্ভবত খুঁজে পেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে।


লেখক: ভূঁইয়া মোঃ ফয়েজউল্লাহ মানিক, উপ-প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ


বিবার্তা/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com