
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে সরাসরিভাবে ও আক্ষরিক অর্থে এ দেশের তিন কোটি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ সমর্থন করে। আজহার ইসলামকে মুক্তি না দিলে ৩ কোটি মানুষকে জেলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বললেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২৪ এর ৫ই আগস্ট পর্যন্ত যে দলের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শীর্ষ নেতাকে খুন করা হয়েছে, তার নাম হলো জামায়াতে ইসলাম। এক এক করে ১০ জনকে খুন করা হয়েছে। আল্লাহ একজনকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তিনি হচ্ছেন আমাদের ভাই এটিএম আজহারুল ইসলাম। আফসোসের বিষয়- ছয়টি মাস চলে গেছে, বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদদেরকে তাড়ালেও কিন্তু ফ্যাসিবাদের বোঝা এখনো আজহারুল ইসলাম সাহেবের কাঁদে রয়ে গেছে। একটি একটি করে জাতীয় নেতৃবৃন্দ সবাই বেরিয়ে আসছেন, এখনো আজহার সাহেব অন্ধকার কারাগারে। তাই আমি মনের কষ্ট নিয়ে সেদিন বলেছি- আজহার ভাইকে ভিতরে রেখে আমি আর বাইরে থাকতে চাই না। আমি সরকারকে অনুরোধ করেছি- আগামী ২৫ তারিখ স্বেচ্ছায় নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়ে বলবো- 'আমাকে গ্রেফতার করুন এবং আমাকে কারাগারে পাঠান'। যেদিন আজহার ইসলাম মুক্তি পাবে, এর পরের দিন আমার মুক্তিটা দিবেন।
তিনি আরও বলেন, ১৩ টি বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দুঃখে-দুঃখে জীবনের সাথে তিনি লড়াই করছেন। এ সময়টাতে প্রিয় সহধর্মিণীকে তিনি হারিয়েছেন। তার পরিবার ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেছে। এ মানুষটার উপর জুলুম করবেন না। দয়া করে তাকে এখনই মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। যদি মুক্তি না দেন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে সরাসরিভাবে আক্ষরিক অর্থে এ দেশের তিন কোটি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ সমর্থন করে। ৩ কোটি মানুষকে জেলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
জামায়াতের আমীর আরও বলেন, এই ১৭ বছরে বাংলাদেশ অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে। দফায় দফায় রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে। অনেক দলে শাসন আপনারা দেখেছেন, অনেক আদর্শের কথা আপনারা শুনেছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রিয় আদর্শ ইসলামের শাসন কায়েম দেখার সুযোগ এদেশের মানুষের হয়নি। মহান আল্লাহর কাছে ভিক্ষা চাই, ঈমানের সোর্স কোরআনকে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় বসিয়ে দাও। এজন্য আমাদেরকে কবুল করে নাও।
জামায়াতে আমীর আরও বলেন, অনেকে পরিকল্পিত অপবাদ ছড়ায়। এদেশের অন্য ধর্মের মানুষও আছে। এ দেশে যারা জন্মগ্রহণ করবে, তারাই এ দেশের গর্বিত নাগরিক। ধর্ম তার নিজস্ব ব্যাপার। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল নাগরিকদের হাতে তার অধিকার তুলে দেওয়া। আমাদের সংবিধান বিভিন্ন ধর্মের অধিকারের তারতম্য এখানে নেই এবং কোরআনের সংবিধানেও নেই। রাষ্ট্রের উন্নয়ন এবং অধিকার সবার জন্য যদি সমান হয়, তাহলে মুসলিমরা যাকাত দিবে, অন্য ধর্মের লোকেরা টেক্স দিবে। তবে যে ধর্মেরই হোক, কারো যদি সামর্থ্য না থাকে, তিনি টেক্স দিবেন না। উলটো রাষ্ট্র তার দায়িত্ব নেবে।
প্রসঙ্গত: দীর্ঘ ২৮ বছর পরে লক্ষ্মীপুরে খোলা ময়দানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে ১৯৯৭ ইং সালে লক্ষ্মীপুরে এরকম খোলার মাঠে জামায়াতের সমাবেশ হয়।
বিবার্তা/সুমন/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]