বিএনপির গণঅবস্থান থেকে আসছে নতুন কর্মসূচি
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪৭
বিএনপির গণঅবস্থান থেকে আসছে নতুন কর্মসূচি
কিরণ শেখ
প্রিন্ট অ-অ+

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি হিসেবে আজ সারা দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে গণঅবস্থান কর্মসূচি করবে বিএনপি। এই কর্মসূচিতেও বড় লোকসমাগমের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। ঢাকায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচি ঘিরে দলটির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি প্রায় প্রতিদিনই যৌথসভা, সমন্বয় সভা এবং প্রস্তুতি সভা করছে। পাশাপাশি দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও পৃথক পৃথকভাবে প্রস্তুতি সভা করেছেন।



এছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের সমমনা দল এবং জোটগুলোও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সমমনা দল এবং জোটের নেতারা কর্মসূচি সফল করতে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সাথে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন। এসব বৈঠকে করণীয় এবং কোন দল ও জোট কোথায় গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তা নির্ধারণ করা হয়।



সমমনা দল ও জোটগুলো ঢাকায় যেসব স্থানে কর্মসূচি পালন করবে: সেগুলো হলো- সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টন প্রীতম হোটেলের উল্টো দিকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, কারওরান বাজার এফসিডি সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনে এলডিপি এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্ব প্রান্তে বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য জোট।



আসছে নতুন কর্মসূচি:



যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি থেকে বিএনপি ও সমমনা দল এবং জোটগুলো নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আর নতুন কর্মসূচি ঠিক করতে ১০ জানুয়ারি রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে নতুন কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে দলটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত করেছে।


সূত্রটি জানায়, গণঅবস্থান থেকে গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ সমাবেশ, ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত জুড়ে মানবপ্রাচীর, পদযাত্রা কিংবা পথসভা মতো পরবর্তী কর্মসূচি আসতে পারে।


জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বিবার্তাকে বলেন, গণঅবস্থান থেকে অবশ্যই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।


কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বিবার্তাকে বলেন, বুধবার গণঅবস্থান থেকে নতুন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।


গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির গণসমাবেশে ব্যর্থ, অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ সরকারের পদত্যাগ, অনির্বাচিত সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা বাস্তবায়ন এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।


তবে ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু এদিন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল থাকায় দলটির পক্ষ থেকে বিএনপির কর্মসূচি পিছানোর আহ্বান জানানো হয়। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিএনপি ঢাকায় ২৪ ডিসেম্বরের গণমিছিল ৩০ তারিখে করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা ও রংপুর বিভাগে এবং ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে গণমিছিল করেছে বিএনপি।


রাজধানীর এই গণমিছিল থেকে ১১ জানুয়ারি ঢাকাসহ আজ সারা দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি। এই কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করেছে বিএনপি। কোন নেতা কোন বিভাগে নেতৃত্ব দিবেন তাদের তালিকা প্রকাশ করেছে দলটি।


ঢাকাসহ ১০টি বিভাগীয় সদরে বিএনপির যেসব নেতারা নেতৃত্ব দিবেন। ঢাকায়: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।


সিলেটে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. মঈন খান, ময়মনসিংহে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, রংপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান।


এদিকে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচির অনুমতির বিষয়ে মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সাথে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।


বৈঠক শেষে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা আমাদের পূর্বনির্ধারিত অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতির জন্য ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে আবেদন করেছি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ডিএমপি আমাদের নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কের এক পাশে অনুমতি দিয়েছে।


তিনি বলেন, আমরা আমাদের কর্মসূচি সফলভাবে পালন করার জন্য অনুমতি পেয়েছি। সেখানে বসে মাইকে দুটি কথা বলাই আমাদের কর্মসূচি। আমরা চার ঘণ্টা বসব, অফিসের সামনের ফুটপাত থেকে সড়কের ডিভাইডার পর্যন্ত একপাশে বসতে পারব। আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সেখানে বসবে, বেলা ২টা সময় আমাদের কর্মসূচি সমাপ্ত হবে।


লোক সমাগমের বিষয়ে জানতে চাইলে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বিবার্তাকে বলেন, গণঅবস্থান সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আর বিএনপির গণঅবস্থানে তো লোক আসবেই। আমাদের কর্মসূচিতে দলীয় নেতা কর্মী, সমর্থক এবং জনসাধারণও আসবেন।


জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বিবার্তাকে বলেন, গণঅবস্থান কর্মসূচি আমরা সুন্দর এবং ভালোভাবে করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।


বিবার্তা/ কিরণ/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com