শিরোনাম
বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় সেই মা
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৩১
বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় সেই মা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় স্থান পেলেন বাংলাদেশের সীমা সরকার। যিনি তার ১৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে কোলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে যান। এই ছবি ব্যাপক সাড়া ফেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।


মায়ের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হয় অনেকে। এতে ফুটে উঠে এক অদম্য মায়ের তার সন্তানের প্রতি ভালোবাসা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধার অভাব।


তবে প্রতিবন্ধী ছেলেকে পড়াশোনা করানোয় নিগ্রহের শিকারও হয়েছেন সীমা। স্বল্প আয়ের পরিবারে প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়াতে গিয়ে আর্থিক অনটনেও পড়েছেন তিনি।


সব প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে দিন-রাত শ্রম দিয়েছেন সীমা। শ্রমের যথাযোগ্য মূল্যও তিনি পেয়েছেন। ছেলে কলা অনুষদে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। বিবিসি সীমা রানি সরকারকে ‘ফুল-টাইম মাদার’ অ্যাখ্যা দিয়েছে।


বাংলাদেশে প্রায় কোনো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানেই শারীরিক প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নেই। ছেলেকে কোলে নিয়ে তিন-চার তলা সিঁড়িও বেয়েছেন সীমা।


বিশ্বের ৬০টি দেশের ১৫ থেকে ৯৪ বছর বয়সী বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীদের নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় স্থান পাওয়া কয়েকজনের কথা উল্লেখ করা হল।


নিমকো আলী: ৩৫ বছরের এই নারী সোমালিল্যান্ডের একজন লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট। তিনি নারীদের যৌনাঙ্গ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। এই কাজের জন্য তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছেন তিনি।


বুশরা ইয়াহইয়া আলমুটাওয়াকিল: ৪৯ বছরের এই নারী ইয়েমেনের একজন শিল্পী, ফটোগ্রাফার ও অ্যাক্টিভিস্ট। তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনের প্রথম নারী পেশাদার ফটোগ্রাফার। তার তোলা ছবি আন্তর্জাতিক পাবলিকেশনে ছাপানো হয়েছে এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে। তালিকায় তিনি সাত নম্বরে রয়েছেন।


আলিনা আনিসিমোভা: কিরগিজস্থানের একজন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামার। তার বয়স ১৯। তিনি দেশটির মহাকাশ সংক্রান্ত স্কুলের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের উদ্দেশ্য দেশটির প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা।


ফ্রান্সিস আর্নল্ড: যুক্তরাষ্ট্রের একজন অধ্যাপক। তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ো-ইন্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োকেমিস্ট্রি পড়ান। এই রসায়নবিদ তার কাজের জন্য ২০১৮ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।


উমা দেবী বাদি: উমা নেপালের নাগরিক। তিনি দেশটির বাদি সম্প্রদায়ের। এই সম্প্রদায়কে নেপালে অস্পৃশ্য হিসেবে ধরা হয়। এই উমা দেবী বাদি দেশটির সংসদের সদস্য হয়েছেন এবং সম্প্রদায় নিয়ে যে একটা মানুষের বিরূপ ধারণা আছে সেটা পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন।


কৃষ্ণা কুমারী : পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম দলিত হিন্দু নারী হিসেবে সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কৃষ্ণা কুমারী (৩৯)। নির্যাতনের শিকার মানুষের অধিকার রক্ষা, বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে তিনি কাজ করেন। তালিকায় কৃষ্ণা ৪৮ নম্বরে রয়েছেন।


চেলসি ক্লিনটন: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মেয়ে তিনি। ৩৮ বছরের এই নারী ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের ভাইস-চেয়ার। তিনি অসংখ্য বই লিখেছেন। তিনি অনেক বিষয়ে কাজ করেছেন যার মধ্যে পরবর্তী প্রজন্মকে নেতৃত্বে আসার জন্য ক্ষমতা প্রদানে সাহায্য করা রয়েছে। তালিকায় ২০ নম্বরে রয়েছেন তিনি।


জুলিয়া গিলার্ড: জুলিয়া গিলার্ড অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি এখন নারী এবং শিশুদের শিক্ষা ও নেতৃত্বের বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। তালিকায় তিনি ৩৬ নম্বরে রয়েছেন।


সাকদিয়াহ মারুফ: ৩৬ বছরের এই নারী ইন্দোনেশিয়ার একজন স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান। তিনি দেশটির প্রথম মুসলিম নারী স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান। তবে তার কাজ মানুষের কৌতুক শুনিয়ে মনোরঞ্জন করা নয়। তিনি তার কাজের মাধ্যমে ইসলামের উগ্রপন্থাকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে কাজ করেন।


সাপারাক শাজারিজাদেহ: তিনি ইরানের একজন অ্যাক্টিভিস্ট। ৪৩ বছরের এই নারী প্রকাশ্যে মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলেন। ইরানে মেয়েদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। এই কাজের জন্য তাকে ২০ বছরের জেল খাটতে হচ্ছে এখন।


জিং যাও: চীনের একজন উদ্যোক্তা তিনি। ৩৫ বছরের এই নারী একটি অনলাইন নেটওয়ার্ক চালান। যেখানে নারীরা তাদের শরীর সম্পর্কে জানতে পারেন এবং যৌন ইচ্ছা সম্পর্কে আলোচনা করেন। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com