
‘জাগো তারুণ্য রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে রাজধানীর মিরপুরে বাঙলা কলেজ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনার। বৃহস্পতিবার কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই সেমিনারে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আসলামুল হক।
আসলামুল হক বলেন, কারা এদেশে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করেছে? আমরা তো জঙ্গিবাদের জন্য বাংলাদেশকে স্বাধীন করিনি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এদেশকে সুখী, সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে গেছেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন, গণ অভ্যূত্থান এমনকি ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের যারা বিরোধীতা করেছে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বার বার ষড়যন্ত্র করেছে তারাই ’৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারের হত্যার মধ্যদিয়ে এদেশে জঙ্গিবাদের বীজ বুনে গেছে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল এই স্বাধীনতা বিরোধীরাই বাংলার বুকে সরকার গঠন করে, স্বাধীন দেশের পতাকা লাগিয়ে রাজাকারদের গাড়িতে। বঙ্গবন্ধু ছিল বলেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আর তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে ছিলেন বলেই আজ আমরা লাল সবুজের পতাকার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে পারছি। পারছি, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি কার্যকর করতে। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্যেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে এসেছে। সারাদেশে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত, একটি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি অন্যটি স্বাধীনতা বিপক্ষের শক্তি। এই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই স্বাধীনতা বিরোধীরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশের অবস্থা কোথায় ছিল। শেখ হাসিনার সরকার গঠনের পর আজ বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। তাই তরুণ প্রজন্মকে দেশের ও জনগণের উন্নয়নে সুখী সমৃদ্ধশালী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাতকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসলামুল হক বলেন, জঙ্গিবাদ মুক্ত, মাদকমুক্ত সুন্দর আগামী গড়তে তরুণরাই হবে আগামী দিনের সৈনিক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব তারুণ্যের উপর নির্ভরশীল। এই তরুণরাই একটি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে আবার একটি জাতি ধ্বংসের জন্য তরুনরাই যথেষ্ট। তাই তরুণ প্রজন্মকে সচেতন হওয়া জরুরি। কেননা এই তারুণ্যের শক্তিতে সন্ত্রাসবাদের কাজে লাগিয়ে একটি মহল ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চায়। তাই কারো ভুল প্ররোচণা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
তরুণদের উদ্দ্যেশে রোকেয়া প্রাচী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে এদেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আগামীতে তোমরাই। মাথাপিছু আয় ১৭ হাজার ডলারে উত্তীর্ণ করবে তোমরা। উন্নত দেশে রূপান্তর করবে। নিজের ও অন্যের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটাবে তোমরাই। আর দেশের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে আসতে হবে তোমাদের মত তরুণ প্রজন্মকেই।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই'র পররাষ্ট্র বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, কাজী খুররাম আহমেদ। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের ফলে ইসলাম কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে। তারা যে ইসলামের কত বড় শত্রু, তা আমাদের বোঝা দরকার। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য হাজার কোটি টাকার কাজ নিয়ে এসেছিল জাপানের কিছু প্রতিনিধি। হলি আর্টিজানে তাদের জবাই করে হত্যার পর কতটা কষ্ট করে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে তা সরকারই ভাল বলতে পারবেন। এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল দেশের শত্রুরা। তারা ইসলামের শত্রু। পরবর্তীতে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির সফলতার পর এখন বিশ্বে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এই অবস্থান প্রশংসিত হয়েছে। এমনি ইউরোপ আমেরিকাতে আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যেয়ে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য গর্বের।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সরকারি বাঙলা কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. ফেরদৌসি খান।
অনুষ্ঠান শেষে সুচিন্তা’র গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন, অসমর্থন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
সেমিনারে সঞ্চালনা করেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জব্বার হোসেন।
বিবার্তা/হাসান/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]