শিরোনাম
নেত্রকোণা আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:৪২
নেত্রকোণা আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ
ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান খানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মো. শামছুজ্জোহা। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব‌্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আবেদন করেছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা।


গত ২৮ নভেম্বর সোমবার ট্রাইব‌্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আবেদনটি জমা দেন তিনি। আবেদনের সাথে তিনি একাত্তরে শান্তি কমিটির একটি সভার ‘প্রতিবেদনের অনুলিপি’ দেন, যেখানে সভায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতিউরের নাম রয়েছে।


তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মতিউর রহমান বলেন, তিনি কোনো অপরাধের সাথে জড়িত নন। একাত্তরে তিনি মুক্তারপাড়া এলাকায় শ্বশুরের বাসায় পাক হানাদারদের নজরবন্দি ছিলেন। তার জামিনদার ছিলেন নেত্রকোণা কলেজের অধ্যক্ষ। এই বক্তব্যের সমর্থনে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য রয়েছে। প্রয়োজনে সে সব তিনি হাজির করবেন।


এ বিষয়ে ট্রাইব‌্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান বলেন, মতিউর রহমান নামে নেত্রকোণার একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সেটাকে নথিভুক্ত করেছি। তবে অভিযোগের কোনো কিছুই আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখিনি। তার পরিচয়ও জানি না। আইন অনুসারে আমরা ধারাবাহিকভাবে এটা নিয়ে কাজ করবো।


মতিউর রহমানের পিতার নাম আব্দুর রহমান খান। তাদের বাড়ি সাতপাইয়ে। তিনি বর্তমানে নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের প্রশাসক। প্রায় তিন মাস আগে মতিউরকে সভাপতি করে নতুন কমিটি হয়। এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত হিসাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। নতুন কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো হয়নি। একাত্তর সালের আগে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে থাকলেও একাত্তরে পাকিস্তান বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে মতিউর আল বদর বাহিনীতে যোগ দেন বলে শামছুজ্জোহার দাবি।


অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা শামছুজ্জোহার আরও বলেন, একাত্তরে দুই বার তার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। প্রথমবার ২০ এপ্রিল রাজাকার সৈয়দ হাফিজ উদ্দিন, সৈয়দ সোনা মিয়ার নেতৃত্বে ভোলা মিয়া, আল বদর শহীদুল্লাহ পিন্টু ও আব্দুর রহিম ফরাজী হামলায় অংশ নেন। তারা এসে বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।


‘দ্বিতীয়বার পিন্টু-ফরাজী-ভোলা এলেও নেতৃত্বে ছিলেন আল বদর নেতা মতিউর রহমান খান। ওই দিন রাজাকার-আল বদররা আমার বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র ভাংচুর করে আগুন দিয়ে দেয়।’


দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাড়ি ফিরে এসব ঘটনা জানতে পেরেছেন জানিয়ে শামছুজ্জোহা বলেন, ‘আমি বাড়ি ঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত ওই রাজাকার-আল বদরদের বিচার চাই।’


মুক্তিযোদ্ধা গোলাম এরশাদুর রহমানের লেখা ‘মুক্তিসংগ্রামে নেত্রকোণা’ বইয়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ তালুকদার, ডাক্তার হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, নুরুল ইসলাম খান, ছাত্রলীগ নেতা মতিউর রহমান খান, দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার সংবাদদাতা আল আজাদ ও নেত্রকোণা কলেজ সংসদের ১৯৭০ সালের জিএস জাহাঙ্গীর কবীর হানাদারদের নিকট আত্মসমর্পণ করেন।


বিবার্তা/জাকিয়া/যুথি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com