ধর্ষণ ও নির্মম পাশবিক নির্যাতনের শিকার দিনাজপুরের শিশুটির শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনো শঙ্কা কাটেনি। কারণ শিশুটির ক্ষত-বিক্ষত প্রজনন অঙ্গের সংক্রমণ রক্তের মাধ্যমে তার পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ার (সেপটিসিমিয়া)আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি মানসিকভাবেও ভীষণ আঘাত পেয়েছে শিশুটি। নিষ্পাপ শিশুটির ক্রমাগত আর্তনাদে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) হৃদয়স্পর্শী পরিবেশ বিরাজ করছে।
এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের শিশুটির অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। শিশুটি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল হওয়ায় তাকে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে। শিশুটির ক্ষত হাড় পর্যন্ত পৌঁছেছে, পুরোপুরি সুস্থ হতে এখনও এক-দুই মাস সময় লাগবে।
চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন, শিশুটির প্রজনন অঙ্গে দেখা দেয়া সংক্রমণ রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে (সেপটিসিমিয়া) পড়তে পারে। তাকে পুষ্টিকর খাবার দেয়া হচ্ছে। সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। গঠন করা হয়েছে বিশেষ মেডিকেল বোর্ড।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির জন্য গঠিত নয় সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল দলের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যবস্থাপত্রের সুপারিশ করেছেন। সেটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) এক সংবাদ সম্মেলনে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ায় জেনারেল মো. মিজানুর রহমান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, শিশুটিকে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে। শারীরিকভাবে দুর্বল থাকায় শিশুটির হাই-প্রোটিন ডায়েট চলছে। শিশুটির গায়ে হাত দিলে আঁতকে উঠছে। এখনও আতঙ্ক কাটেনি তার।
শিশুটি পুরোপুরি সুস্থ হতে এক-দুই মাস সময় লাগবে। এরপরই বোঝা যাবে তার অপারেশন লাগবে কি না। তবে ক্ষত হাড় পর্যন্ত পৌঁছেছে। পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। তার চিকিৎসার পুরো খরচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করবে বলেও জানান মিজানুর রহমান।
এদিকে দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহাবুবুল হক শাকিল মেয়েটির পরিবারের ও হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারিভাবে ওই শিশুটির সব চিকিৎসা চলবে।
এর আগে ওসিসি সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম জানান, ধর্ষণের শিকার শিশুটির যৌনাঙ্গ খুবই আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। বুধবার সকালে তাকে অপারেশন করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু যৌনাঙ্গে সংক্রমণ থাকায় অপারেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
এদিকে শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সাইফলুকে গ্রেপ্তার করেছে পার্বতীপুর থানার পুলিশ।
গত ১৮ অক্টোবর জমিরহাট তকেয়াপাড়া গ্রামের বাড়ির পাশে খেলা করছিল পাঁচ বছরের কন্যাশিশুটি। এ সময় তার জেঠা বলে পরিচিত সাইফুল (৩৮) চকলেট ও সন্দেশের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে।
পরদিন ভোরে বাড়ির পাশে হলুদ ক্ষেতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে পাওয়া যায় বলে জানান তার বাবা পিকআপ ভ্যানচালক।
২০ অক্টোবর শিশুটির বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আফজাল হোসেন কবিরাজ (৪৮)। পরে সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে সে জেলহাজতে।
বিবার্তা/রোকন/কাফী
>>দিনাজপুরে শিশু ধর্ষক সাইফুল ৭ দিনের রিমান্ডে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]