টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা, বিপর্যস্ত দেশের ৯ জেলা
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫১
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা, বিপর্যস্ত দেশের ৯ জেলা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

টানা বৃষ্টিতে লোকালয় প্লাবিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ফেনী, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজারসহ দেশের নয় জেলা। টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ছড়া ও নদ-নদী দিয়ে তীব্র বেগে ভারত থেকে আসছে পানি। এতে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট ও মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।


দুই দিন ধরে ঢাকার তুলনায় দেশের অন্য অঞ্চলে বৃষ্টি ছিলো বেশি। বৃহস্পতিবারও তা অব্যাহত থাকতে পারে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় যে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে।


বুধবার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বলেন, দেশের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি এই মুহূর্তে বাড়ছে।


কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, মুহুরী, ফেনী, হালদা নদীর পানি ৭টি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আরো নতুন নতুন অঞ্চলে বিস্তৃত হতে পারে।


এদিকে, দেশের উত্তর পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আগামী তিন দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র৷ সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টা একইরকম থাকবে বলেও আভাস দিয়েছে সরকারি দপ্তরটি।


পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, মৌসুমি লঘুচাপের কারণে ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের সীমান্তে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত একই থাকবে। তারপর থেকে কমে যেতে পারে। মোটামুটি তিন দিনের মধ্যে অনেক জায়গাতেই বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।


ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, লঘুচাপের কারণে আসাম, মিজোরাম, অরুনাচল, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মনিপুর ও নাগাল্যান্ডে আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত একদিন পর কিছুটা কমতে পারে।


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক সভায় জানানো হয়, বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে ত্রাণকাজ চলমান রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলার জেলা প্রশাসক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে।


এরইমধ্যে সেনা ও নৌবাহিনীর টিম ফেনীতে পৌঁছে গেছে। তারা উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ফেনী জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৬০০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।


এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। বুধবার রাতে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।


এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কন্ট্রোল রুম খোলার কথাও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৩৩ ১৮২৩৪ ৯৬২, ০১৭৬৫ ৪০৫৫৭৬, ০১৫৫ ৯৭২৮১৫৮, ০১৬৭৪৩৫৬২০৮ এবং ই-মেইল: [email protected] এবং [email protected]


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি লঘুচাপ এবং ভারী বৃষ্টিপাত জনিত কারণে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাওয়ায় নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ফেনী ,চট্টগ্রাম ,খাগড়াছড়ি ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটে বৃষ্টিপাত কমে এলেও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সিলেটের বৃষ্টিপাতের ওপর এই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নির্ভর করে না। মূলত ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।


দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, চলতি সময়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।



বন্যাকবলিত জেলাগুলো হলো, ফেনী, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও খাগড়াছড়ি।



ফেনী : এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বন্যায় সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ফেনীর তিন উপজেলা পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায়। প্লাবিত হয়েছে এই তিন উপজেলার শতাধিক গ্রাম, পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ।


বন্যা পরিস্থিতিতে ডিঙি নৌকায় পানিবন্দী মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা শুরু করেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। উদ্ধারে নামেন ফায়ার সার্ভিসের লোকজনও।


ফেনীর আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ সেলিম বলেন, সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন ফেনীর বাসিন্দারা। গত ৩৬ বছরে অনেকবার বন্যা হলেও এ ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। এবারের বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।


সর্বশেষ বুধবার বিকেল থেকে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে নেমেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ছয়টি স্পিডবোটে করে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন সেনাসদস্যরা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও তিনটি স্পিডবোটে উদ্ধারকাজ শুরু করেছেন।


জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার তৎপরতায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডও যুক্ত হচ্ছে। বন্যার কারণে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কসহ স্থানীয় সব গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।


জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, বন্যায় উদ্ধারকাজে সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী ছয়টি স্পিডবোট নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন। বিজিবির সদস্যরাও কাজ করছেন। কোস্টগার্ডও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হচ্ছে।


নোয়াখালী : নোয়াখালীর নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটিতেই জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তিন দিন ধরে বেশির ভাগ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে।


নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, কাজি কলোনি, লইয়ার্স কলোনি, রশিদ কলোনি ও কৃষ্ণরামপুর এলাকার বেশিরভাগ বাসাবাড়ির আঙিনায় বৃষ্টির পানি থই থই করছে।


চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের সবকটিই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় এক লাখ মানুষ। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি পাহাড়ি ঢলে ভাঙন দেখা দিয়েছে ধুরং নদের বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে। ফটিকছড়ির ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, বন্যায় পাশের রাউজান উপজেলার প্রায় আটটি ইউনিয়ন এবং হাটহাজারী উপজেলার ৮-১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।


এদিকে, দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ছয়টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির পরিমাণ ১৯৩ মিলিমিটার।


কুমিল্লা : কুমিল্লার গোমতী নদীতে পানি বেড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি ও ঢলের পানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। গোমতী নদীর আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, গোমতীর তীর ঘেঁষে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। চরাঞ্চলের কয়েক হাজার একর সবজিখেত পানিতে তলিয়ে গেছে।


স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত ১০ বছর গোমতী নদীতে এত পানি দেখেননি।


খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি সদর ও পানছড়ি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দীঘিনালা উপজেলায় আরও অবনতি হয়েছে। দীঘিনালায় এখনো হাজারো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন।


দীঘিনালার সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা ও লংগদু উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।


মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ছড়া ও নদ-নদী দিয়ে তীব্র বেগে ভারত থেকে আসছে পানি। মনু নদের পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


অন্য প্রধান তিন নদ-নদী ধলাই, জুড়ী ও কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদ-নদীর বাঁধ ভেঙে, উপচে ৬২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।


সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে বৃষ্টি, উজানের পাহাড়ি ঢল সুরমাসহ অন্যান্য নদীর পানি বাড়ছে। সুরমা নদীর পানি বুধবার ১২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। নদী ও হাওর এমনিতেই ভরা বর্ষার পানিতে টইটম্বুর। তাই পানি বাড়লে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


সুনামগঞ্জে জুন মাসের মাঝামাঝি ও জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই দফা বন্যা হয়েছে। এতে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়েছে। সরকারি হিসাবেই বন্যায় ৩০ হাজার ঘরবাড়ির বিধ্বস্ত হয়েছে।


সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেছেন, দুই দিন ধরে সুনামগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হওয়ার কারণেই মূলত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি আরও বাড়তে পারে। তবে সুনামগঞ্জে বড় বন্যার কোনো পূর্বাভাস নেই।


হবিগঞ্জ : টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের খোয়াই নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটায় খোয়াই নদের মাছুলিয়া পয়েন্টে পানি ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিতে আছে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ।


পাউবোর হবিগঞ্জ কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হাবিবুর রেজা বলেন, ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খোয়াই নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর মাছুলিয়া, শায়েস্তাগঞ্জ ও বাল্লা সীমান্তে ১২৩ থেকে ২০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি খোয়াই নদের মাছুলিয়া পয়েন্টে আজ বিকেল ৫টায় পানি বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে কোথাও বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি।


সিলেট : বুধবার বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও কমেনি মানুষের ভোগান্তি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফলে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকেই এমন বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হননি।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার পর ইমিগ্রেশনের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।


পানির তোড়ে গাজীর বাজার এলাকায় একটি অস্থায়ী সেতু ভেঙে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।


উল্লেখ্য, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ দুর্বল হয়ে মিলেছে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে। এ অবস্থায় দেশের আট বিভাগেই মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।


বুধবার রাতে দেয়া ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয় দেশের মধ্যাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গুরুত্বহীন হয়ে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।


মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।


এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।


পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার বার্তায় আট বিভাগেই মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com