
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে দিনের পর দিন অধিকারবঞ্চিত-শোষিত মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেছেন। জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা বাঙালির মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ার পরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিল, তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ওদের সাথে আর থাকব না।’
‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) চুয়ান্ন (১৯৫৪) সালে নির্বাচন করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদে ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনো তিনি মুখে উচ্চারণ করেননি। কিন্তুও একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদেরকে সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে গিয়েও করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা জয়বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক উন্নতি চায় না।
তিনি আরও বলেন, তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে। সেজন্যই তারা বারবার ইলেকশন বানচাল করে কীভাবে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে, বারবার অগ্নিসন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা একজন বড় গেরিলা ছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা ছিলেন একজন বড় গেরিলা। সেভাবেই তিনি কাজ করেছেন। ছয় দফা আন্দোলন সংঘটিত করার পিছনে তার অনেক অবদান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (বেগম ফজিলাতুন্নেছা) ৭ জুনের হরতাল থেকে শুরু করে সকল আন্দোলন সংগ্রামের নেপথ্যে ছিলেন, কিন্তু সক্রিয়ভাবে করেননি। গোপনে নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করা, ছাত্র নেতাদের সাথে দেখা করা, আন্দোলন করার সকল নির্দেশনা, মিটিং করা সব কিছুই তিনি করতেন। কিন্তু তিনি কখনো প্রকাশ্যে আসেননি। এমনকি ১৯৪৮ সাল থেকে জাতির পিতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানিরা যে সমস্ত গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে সেখানে আমার মাকে কখনো ধরতেই পারেনি। তিনি সব সময় তার পোশাক পরিচ্ছদ পরিবর্তন করে, একটা বোরকা পড়ে তারপরে গাড়িটা ডেকে, স্কুটারে করে বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র নেতাদের সাথে দেখা করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে দেখা করা যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া সেগুলো তিনি করতেন।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]