ঈদকে কেন্দ্র করে গত দুই মাসে বাজারে পাঁচ কোটি জাল টাকা ছাড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
২৬ জুন, সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানান তিনি।
হারুন অর রশীদ বলেন, গতকাল রাতে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের লালবাগ জোনাল টিম লালবাগ থানাধীন কাশ্মীরি লেন এলাকার একটি ছয়তলা ভবনে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ওই ভবনের তৃতীয় ও ষষ্ঠ তলায় জাল টাকা তৈরির একটা ঘরোয়া কারখানা পাওয়া যায়।
পরে জাল টাকা তৈরি করার সময় কারখানার মহাজন মিয়া, তার স্ত্রী মিনারা খাতুন, মূল কারিগর সাইফুল ইসলাম, তার স্ত্রী মিলি খাতুন, মহিলা কারিগর আলপনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি টিনের ট্রাংকে রক্ষিত সম্পূর্ণ প্রস্তুতকৃত ৮২ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করা হয়।
অভিযানকালে এই ঘরোয়া কারখানা থেকে জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, জলছাপ যুক্ত বিশেষ কাগজ, বিভিন্ন রকমের মনোগ্রাম সম্বলিত স্ক্রিন, ডাইস, বিভিন্ন রং এর কালি, কাগজ কাটার যন্ত্র, কাচি, চাকুসহ প্রায় ২ কোটি জাল টাকা তৈরি করার উপযোগী সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি।
হারুন অর রশীদ জানান, কাশ্মীরি লেন এলাকায় জাল টাকা ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য একটা সংঘবদ্ধ চক্র একত্রিত হয়েছে —এ খবরের সত্যতা যাচাই করে কাশ্মীরি লেনর স্বপ্ন শপিং মার্কেটের পাশের একটা গলিতে চারজনকে সন্দেহজনকভাবে চলে যেতে দেখে তাদের সাথে থাকা ব্যাগ এবং শরীর তল্লাশি করে প্রায় ২৫ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করে তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে জিজ্ঞাসা করলে জাল টাকার উৎসস্থলে নিয়ে যেতে সম্মত হয়। পরবর্তীতে তাদের দেখানো মতে বাড়িটির তৃতীয় এবং ষষ্ঠ তলায় অভিযান চালিয়ে এই ঘরোয়া কারখানাটি আবিষ্কার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বাবুল জাল টাকা নিয়ে গ্রেফতার হয়ে ইতঃপূর্বে পাঁচবার, তার স্ত্রী মিনারা খাতুন তিনবার এবং সাইফুল ইসলাম দুইবার বিভিন্ন মেয়াদে হাজত বাস করেছে।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসা করলে জানায়, জামিনে মুক্তি পেতে তাদের লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। উচ্চ সুদে ধার নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে আবারো তারা একই কাজে নিয়োজিত হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে স্পেশাল পাওয়ার অপং এ একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। রিমান্ডে এনে চক্রের বাদবাকিদের সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জাল টাকা তৈরির মূলহোতা একাধিক বিয়ে করেছেন জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, জাল টাকা দিয়ে তিনি বিয়ে করেন। জাল টাকা দিয়ে তিন দিন সংসার পরিচালনা করেন। জাল টাকার মাধ্যমে এসব কাজ করেন তিনি।
বিবার্তা/রিয়াদ/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]