উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোখা'র অগ্রভাগের প্রভাব শুরু
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৩, ০৫:৪৫
উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোখা'র অগ্রভাগের প্রভাব শুরু
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল থেকে ৪১০ কিলোমিটারের মধ্যে।


এ ঝড় উপকূলে উঠে আসতে পারে আজ, রবিবার ( ১৪ মে) সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে, তবে ঝড়ের অগ্রভাগ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় রবিবার প্রথম প্রহরেই ঝড়ের প্রভাব শুরু হয়েছে।


কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া ১৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিল।


এটি আরও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়েছে।


মধ্যরাত থেকেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপেও হালকা বাতাস ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, রাত ৩টা থেকে সেন্ট মার্টিনে আবহাওয়া কিছুটা খারাপ হতে শুরু করেছে। হালকা হালকা বাতাস ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সাগরেও জোয়ার আসা শুরু করেছে।


আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।


ঘূর্ণিঝড়টির উপকূলের দিকে এগোনোর গতি শনিবার বেড়েছে। এখন এটি প্রায় ২০ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে, যা শুক্রবার পর্যন্ত কিলোমিটারের মতো ছিল। অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কক্সবাজার এবং এর আশপাশের দ্বীপ ও চরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি রয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা জেলা এবং কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে।


আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের মানে হলো বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের ওপর বা কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। আর ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের মানে হলো, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।


আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর মোংলা সমুদ্রবন্দরকে দেখাতে বলা হয়েছে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত।


ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং এসব জেলার কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।


চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com