শিরোনাম
মামলায় থমকে গেছে গ্রামীণ ব্যাংক সংস্কার
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬, ২০:০৭
মামলায়  থমকে  গেছে গ্রামীণ ব্যাংক সংস্কার
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

মামলায় আটকে গেছে নোবেল বিজয়ী গ্রামীণ ব্যাংক সংস্কারের উদ্যোগ। দীর্ঘদিন শূণ্য রয়েছে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নয় পরিচালকের পদ। সরকারি উদ্যোগে বাদ সাধছেন ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক তাহসিনা খাতুন। সরকারি দুটি বড় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট করেছেন তিনি। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চালু করা নিয়মেই ব্যাংকটিকে পরিচালনার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাহসিনা খাতুন।


গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সরকারের তৈরী করা এক সারসংক্ষেপে উঠে এসেছে সার্বিক চিত্র। দুই পাতার ওই সারসংক্ষেপে বলা হয়, এমডি নিয়োগের জন্য ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে ড. শামসুল বারীকে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। ব্যাংকটির পরিচালকদের পক্ষে তাহসিনা খাতুন সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। এতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক এবং সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান ড. শামসুল বারীকে বিবাদী করা হয়। তবে মামলাটি দাখিলের সময় সরকারকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। রিটের পেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর সার্চ কমিটি গঠন কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল ইস্যু করেন। রিটটি শুনানির জন্য গত ২ আগষ্ট কার্যতালিকায় থাকলেও শুনানি হয়নি।


গ্রামীণ ব্যাংক আইন-২০১৩ এর ধারা ৯ (১) অনুযায়ী পরিচালনা পরিষদ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত তিন জন ব্যক্তি ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঋণগ্রহীতা শেয়ার হোল্ডারদের মধ্য থেকে নির্বাচিত নয় জন ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠন করার বিধান রয়েছে। ওই আইনের ১১(১) ধারা অনুযায়ী নির্বাচিত পরিচালকদের কর্মকাল তিন বছর। গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের সর্বশেষ নির্বাচিত নয় জন পরিচালক ২০১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী তাদের তিন বছর কার্যকাল শুরু করেন। তাদের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী। পরবর্তী সময়ে ওই আইনের ধারা ১৭(২) ও ১৭(৩) অনুযায়ী নতুন পরিচালনা পরিচালক নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার নিযুক্ত পরিচালক দিয়ে বোর্ড সভা অনুষ্ঠানের জন্য গত বছরের ৩০ মার্চ একটি নির্দেশনা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পরিচালকদের পক্ষে আদালতে রিট করেন তাহসিনা খাতুন, যা শুনানির জন্য এখনও আদালতের কার্যতালিকাভূক্ত হয়নি।


গ্রামীণ ব্যাংকে বর্তমানে সরকারনিযুক্ত তিনজন পরিচালক রয়েছেন। তারা হলেন, খন্দকার মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম ও আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম শাহ আলম সারওয়ার।


গ্রামীণ ব্যাংক আইন অনুযায়ী ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের ২৫ শতাংশের মালিক সরকার। আইন অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধনের সর্বোচ্চ সীমা ৩০০ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ছিল ৬৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ২৫ শতাংশ হিসেবে ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকার মালিক সরকার। ২০১৫ শেষে সরকার তার শেয়ার বাবদ পাঁচ কোটি ৬৬ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করে।


তাহসিনা খাতুন বলেন, পুরনো নিয়মেই ব্যাংকটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে গ্রামীণ ব্যাংক। তাই এই নিয়মের ব্যত্যয় হলে ব্যাংকটির মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।


বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদ শূণ্য থাকলে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা তৈরী হয়। এতে সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com